গ্রেপ্তার দুই আসামি ও পুলিশের অগ্রগতি
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ী এহতেশামুল হককে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই মামলায় ডিএমপির নিউমার্কেট থানা পুলিশ ইতোমধ্যে দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- আসিফুল হক আসিফ ওরফে ঝন্টু (৩২) এবং মো. কাউসার মৃধা (২৪)।
আজ রোববার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ, গোয়েন্দা তথ্য, এবং প্রযুক্তির সহায়তায় চাঞ্চল্যকর এই মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে।
গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে একদল দুর্বৃত্ত এহতেশামুল হক এবং ওয়াহিদুল হাসানকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এহতেশামুল হকের হাত ও পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে, এবং তিনি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে ওয়াহিদুল হাসান হাতে জখম নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা বিভিন্ন সময়ে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারে এসে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করতেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তারা ব্যবসায়ীদের হুমকি ও হয়রানি করতে থাকেন। চাঁদাবাজি প্রতিরোধে এহতেশামুল হক এবং ওয়াহিদুল হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সংগঠিত করলে দুর্বৃত্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে এই হামলা চালায়।
নিউমার্কেট থানার পুলিশ তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজ এবং স্থানীয় তথ্য বিশ্লেষণ করে আজ দুপুরে জগন্নাথ সাহা রোড থেকে কাউসার মৃধাকে গ্রেপ্তার করে। এর কিছুক্ষণ পর হাজারীবাগ গার্লস স্কুলের কাছে একটি মেস থেকে এ মামলার ৩ নম্বর আসামি আসিফুল হক আসিফ ওরফে ঝন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার একটি ১০-১২ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দুর্বৃত্তদের চাপাতি দিয়ে কুপানোর নৃশংসতা স্পষ্টভাবে দেখা যায়। এতে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
হামলার পরদিন, শনিবার (১১ জানুয়ারি), মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের সামনে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন করে। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, এবং এলাকায় ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
ডিএমপির নিউমার্কেট থানা পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পেছনে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব একটি বড় কারণ। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং আরও কয়েকজন সন্দেহভাজনের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এহতেশামুল হকের উপর হামলার এই ঘটনা রাজধানীর ব্যবসায়ী সমাজে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে। তবে এই ঘটনার যথাযথ বিচার এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।