ঢাকা, ৭ জানুয়ারি:
৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণে ব্যস্ত। তবে এই দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন আমলারা। সম্প্রতি ৭৬৪ জন পদবঞ্চিত কর্মকর্তার জন্য ৭৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের বরাদ্দ দিয়েছে সরকার, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকে বিভাগীয় মামলা বা চাকরিবিধি লঙ্ঘণের দায়ে অভিযুক্ত বলে জানা গেছে।
রাজপথ থেকে অফিস-আদালত—সব জায়গায় দাবি আদায়ের প্রতিযোগিতা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকট থাকা সত্ত্বেও সরকার উদারভাবে পদবঞ্চিত আমলাদের জন্য এই বরাদ্দ দিয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি নির্ধারিত সময়ের আগেই বিগত সরকারের আমলে পদবঞ্চিত ৭৬৪ জন কর্মকর্তার পুনর্মূল্যায়ন প্রতিবেদন জমা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ভূতাপেক্ষা পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমলাতান্ত্রিকতার ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। জনস্বার্থ উপেক্ষা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যা সুশাসনের পরিপন্থী।”
তথ্য অনুযায়ী, এই পদবঞ্চিত কর্মকর্তাদের অনেকেই বিভাগীয় মামলা বা চাকরিবিধি লঙ্ঘণের অভিযোগে অভিযুক্ত। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুশাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করলে এমন পদক্ষেপ জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে।
সাবেক সচিব আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, “প্রশাসন সংস্কারের নামে বাড়াবাড়ি চলছে। যারা প্রশাসন ক্যাডারে আছেন, তারা অন্যদের সহযোগিতা করছেন না। এভাবে বৈষম্য আরও বাড়ছে।”
২৮ থেকে ৪২তম বিসিএসের ২৫৯ জন কর্মকর্তার নিয়োগ একসময় রাজনৈতিক মতবিরোধের কারণে আটকে ছিল। পরে তাদের নিয়োগ দেওয়া হলেও তারা কোনো আর্থিক বা পদোন্নতিজনিত সুবিধা পাননি।
বিশ্লেষকদের মতে, এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। জনস্বার্থ রক্ষার জন্য ন্যায়সংগত ও নিরপেক্ষ পদক্ষেপই একমাত্র সমাধান।