নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ: বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ
২০২০ সালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে মার্চ মাসে লকডাউন কার্যকর করা হয়। ভাইরাসের বিস্তার রোধে এবং জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার পর্যায়ক্রমে এই পদক্ষেপ নিয়েছিল। তখন থেকেই লকডাউন একটি পরিচিত ধারণায় পরিণত হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও ভারতে নতুন ভাইরাসের সংক্রমণের খবর জনমনে প্রশ্ন তুলেছে: ‘লকডাউন’ কি আবার ফিরে আসবে?
সম্প্রতি চীনে হিউম্যান মেটাপনিমোভাইরাস (এইচএমপিভি) নামে একটি নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই ভাইরাসটি দ্রুত গতিতে সংক্রমিত হচ্ছে এবং এর ফলে হাসপাতাল ও শ্মশানগুলোতে প্রচুর চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, চীনের হাসপাতালগুলোতে ভিড় বেড়েছে। একাধিক ভাইরাস, যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা এ, এইচএমপিভি, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া এবং কোভিড-১৯ একসঙ্গে ছড়িয়ে পড়ার তথ্যও উঠে এসেছে। এ পরিস্থিতি করোনার ভয়াবহতা নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
চীনের পর, ভারতেও এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, কর্ণাটকে তিনটি শিশুর দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের বয়স দুই, তিন এবং আট মাস। এ ভাইরাসের উপসর্গ করোনার সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে।
তিন মাস বয়সী শিশুটিকে ইতিমধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে এবং আট মাস বয়সী শিশুটি কর্ণাটকের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিকে দুই মাস বয়সী আরেকটি শিশুও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এই ঘটনাগুলো ভারতজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
চীনে এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ কেবল স্থানীয় নয়, বরং বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। করোনার মতো বৈশ্বিক মহামারি থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশগুলো এখন নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ভারতে শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নতুন শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি শিশু ও বয়স্কদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় আরও গবেষণা এবং সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।
করোনাভাইরাস মহামারির অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, নতুন ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীন ও ভারতে এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণের খবর থেকে আমরা সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারি। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার এবং স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোকে সময়মতো পদক্ষেপ নিতে হবে।