মালয়েশিয়া থেকে নাটোরে প্রেমের পরিণয়
প্রেম, আংটি বদল, এবং দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে নাটোরে প্রেমিক আনিসুর রহমানের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন মালয়েশিয়ান তরুণী সিটি হাসনা। রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে নাটোর আদালত চত্বরে কাজির মাধ্যমে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। আ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার স্বপন তাদের বিয়ের আইনগত কাজ সম্পন্ন করেন।
এর আগে শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সিটি হাসনা তার মাকে নিয়ে আনিসুর রহমানের বাড়ি, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকায় পৌঁছান।
প্রেমিক আনিসুর রহমান (৪২) গুরুদাসপুর উপজেলার চরপাড়া এলাকার বাসিন্দা, তার বাবা জলিল রহমান। অপরদিকে প্রেমিকা সিটি হাসনা (৩২) মালয়েশিয়ার একটি শহরের বাসিন্দা এবং তার বাবা জাকরি।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে আনিসুর রহমান কর্মসূত্রে মালয়েশিয়ায় যান। সেখানেই কর্মক্ষেত্রে সিটি হাসনার সঙ্গে তার পরিচয় এবং প্রেমের শুরু। প্রেমের সম্পর্ক গভীর হলে পারিবারিকভাবে তাদের আংটি বদল হয়। বিয়ের পরিকল্পনা করে আনিসুর রহমান বাংলাদেশে ফিরে আসেন। কিন্তু বাড়ি ফেরার পরই করোনা মহামারি শুরু হলে ভিসা জটিলতায় সিটি হাসনার বাংলাদেশে আসা সম্ভব হয়নি।
এদিকে আনিসুর রহমান মাঝে মাঝে মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রেমিকাকে দেখতেন। দীর্ঘ ১০ বছরের অপেক্ষার পর সিটি হাসনা অবশেষে ভিসা পেয়ে বাংলাদেশে আসতে সক্ষম হন। শনিবার সকালে তিনি আনিসের বাড়িতে পৌঁছালে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং তাদের বাড়িতে ভিড় জমে।
রোববার সকালে নাটোর আদালতে মুসলিম ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে আনিসুর রহমান ও সিটি হাসনার বিয়ে সম্পন্ন হয়। আনিসুর রহমান বলেন, “আমাদের সম্পর্কের শুরু থেকেই বিয়ের পরিকল্পনা ছিল। অবশেষে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। সকলের কাছে দোয়া ও ভালোবাসা চাই।”
খুবজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, “মালয়েশিয়া থেকে এক তরুণী আমাদের ইউনিয়নে এসেছেন, এটি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। ইতোমধ্যে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। তাদের জন্য শুভ কামনা ও দোয়া রইল।”
প্রেমের এই দীর্ঘযাত্রা এবং শেষ পর্যন্ত সফল পরিণয় এক অনুপ্রেরণার গল্প। তাদের সম্পর্ক প্রমাণ করে ভালোবাসার জন্য অপেক্ষা এবং অধ্যবসায় কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আনিস ও সিটি হাসনার নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা।