সজিবুর রহমান সজিব গ্রেপ্তার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগ সভাপতি সজিবুর রহমান সজিবকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির ডিবি-লালবাগ বিভাগ। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর হাজারীবাগের জাফরবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি-লালবাগের সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় সজিব এজাহারভুক্ত আসামি। এই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করতে দীর্ঘদিন ধরে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল।
গত ১৫ জুলাই ২০২৪ বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমর্থনে একটি ছাত্র মিছিল বের হয়। শিক্ষার্থীরা মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করার সময় ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের কর্মীরা হামলা চালায়।
হামলায় ককটেল বিস্ফোরণসহ দেশি-বিদেশি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। দফায় দফায় চালানো এই হামলায় প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
এই ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর ২০২৪ শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. আবু সায়াদ বিন মাহিন সরকার। মামলায় সজিবুর রহমান সজিব ১৪ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি।
ডিবি-লালবাগ সূত্রে জানা যায়, সিসিটিভি ফুটেজ, গোয়েন্দা তথ্য এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার ভিত্তিতে সজিবুর রহমান সজিবকে চিহ্নিত করা হয়। এরপর হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সজিবকে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ডিএমপির ডিবি-লালবাগ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এই গ্রেপ্তার চলমান তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আসামিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্যাম্পাসে এ ধরনের সহিংসতার ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমর্থক শিক্ষার্থীরা এই গ্রেপ্তারকে ন্যায়বিচারের প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছেন। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, এই ঘটনার সাথে জড়িত অন্য সকল দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক সময়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তবে আন্দোলনে হামলার ঘটনা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিরবতা নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।
এই গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও, শিক্ষার্থীরা আশা করছেন যে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।