অনলাইন ডেস্ক
হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং পোশাকসহ অন্তত ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ১৫ শতাংশে উন্নীত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে এই ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
ভ্যাট বৃদ্ধির কারণ
অর্থ উপদেষ্টা জানান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণের জন্য নয়, বরং অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বৃদ্ধি করাই এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, “ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি দেশীয় অর্থনীতির শক্ত ভিত তৈরি এবং সরকারি রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, তিন তারকা এবং তার ঊর্ধ্বমানের হোটেল ও রেস্তোরাঁর ওপর ভ্যাট বাড়ানো হলেও সাধারণ মানের হোটেল এবং রেস্তোরাঁতে তা বাড়ানো হয়নি। এর ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এ কর বৃদ্ধির কোনো প্রভাব পড়বে না।
নিত্যপণ্যের দামে কোনো পরিবর্তন হবে না
অর্থ উপদেষ্টার মতে, ভ্যাট বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তটি প্রাথমিকভাবে বিলাসবহুল পণ্য এবং উচ্চমানের সেবাগুলোর ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। “নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে কর বাড়ানো হয়নি। ফলে এর দাম অপরিবর্তিত থাকবে,” বলেন তিনি।
অর্থনীতির স্থিতিশীলতার আশা
নতুন বছরে দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার আশা প্রকাশ করে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের এই পদক্ষেপগুলো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেলে উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির গতিশীলতা বাড়বে।”
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ভোক্তাদের মধ্যে ভীতি বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার জন্য সঠিক তথ্য প্রচার করা জরুরি। ভ্যাট বৃদ্ধির বিষয়টি যদি ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়, তাহলে তা অযথা উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।
নতুন নীতির প্রয়োগ
সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশের অবস্থান শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ভ্যাট বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নীতিটি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে।
এ সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে যেমন রাজস্ব আয় বাড়বে, অন্যদিকে তেমন সাধারণ মানুষের ওপর আর্থিক চাপ কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন অর্থ উপদেষ্টা।