নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য বাসনা মল্লিক (৫২) ধর্ষণ ও বিষপানের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। নিহত বাসনা মল্লিকের পরিবার এবং স্থানীয়দের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
২৪ ডিসেম্বর টিসিবি পণ্য বিতরণ ও দাপ্তরিক কাজ শেষে বাসনা মল্লিক তার বাড়ি মাইজপাড়া ইউনিয়নের পোড়াডাঙ্গা গ্রামে ফেরার পথে পরকীয়া প্রেমিক রজিবুল ইসলামের ফোন পেয়ে দৌলতপুর গ্রামে যান। সেখানে পাওনা ১০ হাজার টাকা দেয়ার কথা বলে তাকে ডেকে নেয়া হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, রজিবুল ও তার সহযোগী ফারুক হোসেন তাকে ধর্ষণ করেন।
ধর্ষণের পর বাসনা মল্লিক বিষাক্ত কিছু পান করেন বলে ধারণা করা হলেও পরিবারের দাবি, তাকে জোর করে বিষ খাওয়ানো হয়েছে।
ধর্ষণের পর বাসনা মল্লিক বাড়ি ফিরে বমি শুরু করেন। পরের দিন ২৫ ডিসেম্বর তাকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৬ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
২৮ ডিসেম্বর সকালে মাগুরার শালিখা থানার হরিশপুর গ্রাম থেকে ফারুক হোসেন (৫০) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, বিষপান ও যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে পরকীয়া সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বাসনা মল্লিকের ছেলে রিংকু মল্লিক বলেন, “পাওনা টাকা দেয়ার নামে আমার মাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
মাইজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সফুরা খাতুন বলেন, “বাসনা মল্লিকের মৃত্যু রহস্যজনক। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ হওয়া উচিত।”
এলাকাবাসী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দাবি, অভিযুক্তরা ক্ষমতাসীন দলের কর্মী। তবে ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।