কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তাকে কেন্দ্র করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রসমাজ’ আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে কানুর দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ শেষে হায়দার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন মজুমদার, সদস্য জাহিদুল ইসলাম, নাসিম মিয়াজি, ও আবুল হাসনাত সিয়াম।
বক্তারা অভিযোগ করেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কানু বিভিন্ন মামলার আসামি হয়েও গ্রেপ্তার হচ্ছেন না। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার প্রেরণাকে ব্যবহার করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে।
সমাবেশে জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগ রিকশা লীগ, আনসার লীগ হয়ে এবার কানু লীগ হয়ে এসেছে। আমরা ছাত্র হত্যার বিচারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখছি না।”
বক্তারা আরও বলেন, “কানুর ঘটনায় একটি মহল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ছাত্র-জনতা তা হতে দেবে না।”
এর আগে রবিবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, দুর্বৃত্তরা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর গলায় জুতার মালা পরিয়ে টানাহেঁচড়া করছে। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধা কানু তাদের কাছে বারবার ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানান।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জামায়াত দুই সমর্থককে বহিষ্কার করেছে।
গতকাল (মঙ্গলবার) ভারতীয় একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বীর মুক্তিযোদ্ধা কানু দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বিচার চেয়েছেন। আলোচিত উপস্থাপক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “দেশে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কৃষক লীগের সাবেক সহসভাপতি। তবে তার বিরুদ্ধে এলাকায় সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
বক্তারা বলেন, “কানুকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”