চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে থেমে থাকা একটি জাহাজে সাতজনকে হত্যার ঘটনায় আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে র্যাব-১১ কুমিল্লা ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
র্যাব জানায়, আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। দুপুর ১২টায় কুমিল্লায় র্যাব-১১ এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্রিফিং করবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাতজনকে হত্যার ঘটনায় চাঁদপুরের হাইমচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে এ মামলাটি করেন।
হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন সুমন বলেন, “মামলাটি ৩৯৬/৩৯৭ ধারায় রুজু করা হয়েছে। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চাঁদপুর সদরের হরিণাঘাট নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে।”
জাহাজে নিহত ব্যক্তিরা হলেন—
1. মাস্টার গোলাম কিবরিয়া
2. গ্রিজার মো. সজিবুল ইসলাম
3. লস্কর মো. মাজেদুল ইসলাম
4. সালাউদ্দিন
5. আমিনুর মুন্সী
6. বাবুর্চি রানা কাজী
এ ছাড়া আহত হয়েছেন সুকানী মো. জুয়েল (২৮), যিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, জুয়েল কথা বলতে না পারলেও ইশারায় জানান, ঘটনার সময় জাহাজে ইরফান নামে আরেক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা একটি চাইনিজ কুঠার, ফোল্ডিং চাকু, দুটি স্মার্টফোন, নগদ ৮ হাজার টাকা, এবং অন্যান্য আলামত জব্দ করে।
মঙ্গলবার বিকেলে ছয়জনের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারকে ২০ হাজার টাকার চেক এবং নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। তবে বাবুর্চি রানা কাজীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত না হওয়ায় তাঁর মরদেহ হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, কোস্ট গার্ড এবং নৌপুলিশের সমন্বয়ে আলাদাভাবে আরও একটি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।