চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ইশানবালা এলাকায় মেঘনা নদীতে নোঙর করে থাকা সারবাহী জাহাজ “এমভি আল-বাখেরা”-তে দুর্বৃত্তদের আক্রমণে সাতজনকে হত্যা এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। নৌ পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নিহতদের গলা কেটে ও মাথা থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর তিনটার দিকে চাঁদপুরের ঈশানবালা খালের মুখে জাহাজটি থেকে লাশগুলো উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতরা জাহাজটির কর্মী ছিলেন। লাশগুলো জাহাজের কর্মীদের ঘুমানোর কক্ষগুলোতে পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন:
গোলাম কিবরিয়া (৬৫): মাস্টার, ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
সালাউদ্দিন: চালক, নড়াইল জেলার বাসিন্দা।
আমিনুল: সুকানি, নড়াইল জেলার বাসিন্দা।
সবুজ শেখ (২৬): লস্কর, ফরিদপুরের বাসিন্দা।
গুরুতর আহত জুয়েল (২৫) ফরিদপুর সদর উপজেলার বকারটিলা গ্রামের বাসিন্দা। তাকে চাঁদপুরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। কারণ জাহাজ থেকে মুঠোফোন, মানিব্যাগসহ মূল্যবান সামগ্রী অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
জাহাজটির মালিক দিপলু রানা বলেন, রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে জাহাজের মাস্টারের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। পরদিন সকালে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া না পাওয়ায় তিনি নিকটবর্তী জাহাজ “মুগনি-৩”-এর নাবিকদের বিষয়টি জানান।
মুগনি-৩ জাহাজের চালক মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, তিনি দুপুর একটার দিকে এমভি আল-বাখেরার কাছে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পাঁচজনকে মৃত এবং তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পান। পরবর্তীতে ৯৯৯-এ ফোন করলে নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে।
শিল্প মন্ত্রণালয় এ হত্যাকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।