নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাংবাদিক মিনহাজ আমানকে শারীরিকভাবে আঘাত এবং লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ইকবাল হোসেনকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ দলীয় সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, “সাংবাদিক মিনহাজ আমানকে প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করার ঘটনা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং এটি ঘৃণ্য অপরাধ। এই গুরুতর কর্মকাণ্ডের জন্য ইকবাল হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।”
শুক্রবার দুপুরে ঢাকার গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জগামী আসিয়ান পরিবহনের একটি বাসে চালকের সঙ্গে ইকবালের তর্ক হয়। বাসটি নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় পৌঁছালে ইকবালের অনুসারীরা বাস চালককে মারধর করে এবং বাসটি ভাঙচুর করে। এ সময় প্রতিবাদ করতে গিয়ে সাংবাদিক মিনহাজ আমানও ইকবালের অনুসারীদের হাতে লাঞ্ছিত হন।
ঘটনার পর সাংবাদিক মিনহাজ তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি ছবি পোস্ট করেন। তিনি লেখেন, “ড্রাইভারের সঙ্গে তর্কের জেরে পিটিয়ে গাড়ি ভেঙে ভিজিটিং কার্ড ধরিয়ে দিলেন নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার অবস্থার কথা বলতেও লজ্জা হয়।”
ইকবালের বহিষ্কারের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা দীর্ঘদিনের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এলাকাবাসী জানান, ইকবাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ভূমি দস্যুতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও দখল বাণিজ্যের মাধ্যমে এলাকার আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছিলেন। তার নেতৃত্বে এলাকায় কিশোর গ্যাং এবং সন্ত্রাসী বাহিনী সক্রিয় ছিল।
স্থানীয়দের দাবি, ইকবাল হোসেন বিএনপির পাশাপাশি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি ইয়াসিন মিয়ার ছত্রছায়ায় বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ উঠলেও কেউ সাহস করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অপরাধ বরদাশত করা হবে না।