রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ বাহিনী সংস্কারের জন্য পাঁচটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম এ প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন। এর মধ্যে অন্যতম প্রস্তাব হলো র্যাব (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) বিলুপ্তির সুপারিশ।
বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী, পুলিশ বাহিনীকে সঠিক দিকনির্দেশনা ও সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি “পুলিশ কমিশন” গঠন করা হবে। কমিশনের চেয়ারম্যান হবেন সংসদীয় স্বরাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান। ৮ সদস্যের এই কমিশনে থাকবেন:
দুই জন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য
একজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য
একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
একজন উচ্চ আদালতের আইনজীবী
দুজন সমাজের বিশিষ্ট নাগরিক
স্বরাষ্ট্র সচিবের মনোনীত অতিরিক্ত সচিব
আইজিপির মনোনীত একজন অ্যাডিশনাল আইজি সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
জাতীয় সংসদ কার্যকর না থাকলে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারক অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রত্যেক উপজেলা ও থানায় নাগরিক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
কমিটির প্রধান সদস্যরা হবেন:
একজন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি সভাপতি হিসেবে
সংশ্লিষ্ট থানার ওসি সদস্য সচিব হিসেবে
দুই ইউপি সদস্য
একজন শিক্ষক
একজন ব্যবসায়ী
একজন পেশ ইমাম
স্থানীয় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।
এই কমিটি দুই বছর মেয়াদে গঠিত হবে, যা সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের পরামর্শে হবে।
বিএনপি দাবি করেছে, র্যাব ইতোমধ্যে দেশে ও বিদেশে নিন্দিত। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক মহল র্যাবকে সমালোচনা করেছে। বাহিনীটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, র্যাবের দায়িত্ব আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং থানা পুলিশ যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রস্তাবে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি প্রতি মাসে “শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশ অফিসার” নির্ধারণ করে তাকে পুরস্কৃত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বিএনপি প্রতিটি জেলা শহরে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও জনবলসহ পূর্ণাঙ্গ পুলিশ হাসপাতাল স্থাপন অথবা বিদ্যমান হাসপাতাল সম্প্রসারণের প্রস্তাব দিয়েছে।
বিএনপির এই প্রস্তাবগুলো দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এ প্রস্তাব নিয়ে সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
