টিকটকার লায়লা আক্তার ফারহাদকে ধর্ষণের অভিযোগে টিকটকার আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ মামুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার উপপরিদর্শক মুহাম্মদ শাহজাহান তদন্ত শেষে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে সেটি বিচারের জন্য ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এ পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে, গত ৯ জুন রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন লায়লা আক্তার ফারহাদ। মামলার পরদিন, ১০ জুন, কুমিল্লার দাউদকান্দি টোল প্লাজা এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালত তার জামিন ও রিমান্ড উভয় আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে, গত ১ জুলাই তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
তদন্তে জানা গেছে, প্রিন্স মামুন সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন পরিচিত টিকটকার। অপরদিকে, বাদী লায়লা আক্তার ফারহাদ ফেসবুকে পরিচিত মুখ এবং বিবাহিত। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি সন্তানদের নিয়ে একাই ফ্ল্যাটে থাকতেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মামুনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং পরবর্তীতে তারা একসঙ্গে মিডিয়ায় কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
২০২২ সালের শুরুর দিকে তারা একসঙ্গে কাজ শুরু করেন এবং পরবর্তীতে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের ভিত্তিতে মামুন লায়লার বাসায় থাকা শুরু করেন এবং তার আইডি, এনআইডি, পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্রে লায়লার ঠিকানা ব্যবহার করতে থাকেন। লায়লার অভিযোগ অনুযায়ী, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মামুন তার সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মতো একই ফ্ল্যাটে বসবাস করেন এবং একাধিকবার তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।
মামলার অভিযোগে লায়লা উল্লেখ করেন, তিন বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে মামুনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে মামুন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং তার ঢাকায় থাকার জায়গা না থাকায় লায়লা তাকে নিজের বাসায় থাকার অনুমতি দেন। ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে লায়লার বাসায় এসে বসবাস শুরু করেন এবং একই রুমে থাকতে শুরু করেন। লায়লার অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মামুন তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। মামুনের বাবা-মা মাঝেমধ্যেই সেখানে এসে অবস্থান করতেন। লায়লা বিয়ের বিষয়টি একাধিকবার বললেও মামুন বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতেন। সর্বশেষ ১৪ মার্চ মামুন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে বিয়ের কথা বললে মামুন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
উল্লেখ্য, মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়েরের পর তিনি কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার হন এবং পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পান। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এ বিচারাধীন রয়েছে।