ঢাকা: জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এই বৈঠকে অংশ নেন দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় নাম না থাকায় বৈঠক থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম এবং মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ।

বৈঠকে আমন্ত্রণ না পেয়ে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “এলডিপি চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ অলি আহমদ বীর বিক্রমের এই বৈঠকে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি না হওয়া দুঃখজনক। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরও আন্তরিক হবেন।”
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার, আগরতলায় সহকারী হাই কমিশনে হামলা এবং সংখ্যালঘু নির্যাতনের গুজব মোকাবিলা করাই এই বৈঠকের মূল এজেন্ডা ছিল। জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “একটি মহল দেশে ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনতে চায়। কিন্তু দেশের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতার প্রশ্নে আমরা একত্রিত হবো।”
বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল উপস্থিত থাকলেও আওয়ামী লীগ বা তাদের সমমনা কোনো দল আমন্ত্রিত ছিল না। বৈঠক শেষে আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বাদ দিয়ে দেশের সব রাজনৈতিক দল এই ঐক্যের অংশ হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাই একমত।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো একমত। এখন দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে।”
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে। তবে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমরা কোনো ছাড় দেব না।”
বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়নি বলে জানান জামায়াতের আমির। তবে তিনি বলেন, “দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না।”
এই বৈঠককে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে নতুন আশার সঞ্চার হলেও এলডিপি নেতাদের ফিরে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার এই প্রচেষ্টায় আগামী দিনে আরও আন্তরিকতা ও সমন্বয় প্রত্যাশা করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।