ঢাকা, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
৫৩ বছরের ইতিহাসে ভিন্নতর এক প্রেক্ষাপটে এলো বিজয়ের মাস। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার গৌরব বুকে নিয়ে এবার নতুন বাংলাদেশের প্রত্যয়ে মুখর হয়েছে জাতি। ১৯৭১ সালে অর্জিত স্বাধীনতার ভিত্তিতে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে সামনে রেখে আলোচনা ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা।
অনেকেই মনে করছেন, ইতিহাসের অতিরঞ্জন এবং উপেক্ষার দিন শেষ। এখন সময় এসেছে সঠিক ইতিহাস চর্চার। জাতির নবীন প্রজন্মের কাঁধে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ভার। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গুরুত্ব নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস বলেন,
“১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। তবে বিগত বছরগুলোতে এ চেতনাকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু প্রকৃত ইতিহাসের আলোকে বিজয়ের মাসের গুরুত্ব তুলে ধরার এখনই সময়।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন,
“মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান সম্ভব হয়েছে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করার এ লড়াই এক নতুন অধ্যায়।”
৭১-এর মুক্তিযোদ্ধারা বর্তমান পরিস্থিতি দেখে নতুন আশাবাদ ব্যক্ত করছেন। সেক্টর ২-এর ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বলেন,
“এটি মুক্তির যুদ্ধ। স্বাধীনতার নয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। গত ৫ আগস্ট গণতন্ত্র এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার যে যুদ্ধ আমরা দেখেছি, তা ধরে রাখাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”
বিজয়ের এই মাসে নানা প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার কথা শোনা যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা এবং সাধারণ জনগণ একবাক্যে বলছেন, কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে দেশ এখনো অনেক দূরে। তবে আগামীর বাংলাদেশের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিজয়ের মাসে স্বাধীনতার চেতনার পুনর্জাগরণ এবং গণঅভ্যুত্থানের সফলতার বার্তা আরও একবার প্রমাণ করে, লাল-সবুজের পতাকা কখনো হার মানে না। এখন সময় সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ এবং জাতি গঠনে সবাইকে একত্রিত হওয়ার।