ভারতের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ কেলেঙ্কারি ইস্যুতে দেশ-বিদেশে চাপ ক্রমেই বাড়ছে। ফরাসি জ্বালানি প্রতিষ্ঠান টোটাল অ্যানার্জি তাদের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেন স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত সরকার আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তি পুনরায় পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ঘটনায় ভারতের লোকসভা এবং দিল্লির রাজপথে বিরোধী দলগুলোর সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) ভারতের লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই আদানি গ্রুপের দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা হয়। বিরোধী দল কংগ্রেস এ ইস্যুতে আলোচনার প্রস্তাব দিলে অধিবেশন মুলতবি করা হয়। বিরোধী দলীয় নেতা মল্লিকার্জুন খার্গে বলেন, “আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ঘুষ এবং আর্থিক দুর্নীতির ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়টি জনগণের করের অর্থের অপচয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সরকার তা এড়িয়ে গেল।”
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে দেশটির কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে। আদালত আদানি গ্রুপের মালিক গৌতম আদানি এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এ ঘটনার পরপরই ফরাসি জ্বালানি কোম্পানি টোটাল অ্যানার্জি আদানি গ্রুপের সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সম্পর্কে আগে কোনো ধারণা পায়নি।
অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত বামপন্থী সরকার আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি পুনঃপর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শ্রীলঙ্কার নতুন মন্ত্রিসভা জানায়, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় তারা এই চুক্তির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।
আদানি ইস্যুতে দিল্লির রাজপথে বিক্ষোভ করেছে যুব কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গৌতম আদানির বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ কেলেঙ্কারি ইস্যুতে ভারত এবং আন্তর্জাতিক মহলে যে চাপ বাড়ছে, তা ভবিষ্যতে গোষ্ঠীটির ব্যবসায়িক অবস্থানে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।