ঢাকা: সংবিধান সংস্কার করতে হলে প্রথমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। শুধুমাত্র জনগণের নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্ভব। শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি’র চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ।
আলোচনা সভায় ব্যারিস্টার পার্থ বলেন, “বর্তমান সংবিধানের কাঠামো অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হলে যেকোনো সরকারই ফ্যাসিস্ট হয়ে যাবে। এই সংবিধানের মাধ্যমে বারবার মানুষের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে। যে সংবিধান মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ, সেই সংবিধান মানুষ একদিন ছুড়ে ফেলে দিবে।”
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, “কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি জনগণের অগোচরে স্বাক্ষর করা যাবে না। সব চুক্তি জনসম্মুখে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে করতে হবে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গুরুত্ব উল্লেখ করে ব্যারিস্টার পার্থ বলেন, “সংবিধানের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা উচিত। এটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য অপরিহার্য।”
তিনি আরও বলেন, “মাদক প্রতিরোধে সংবিধানে আরও শক্তিশালী আইন প্রণয়ন করতে হবে। এছাড়া, যারা অর্থ পাচার করে তাদের জন্য ‘অর্থনৈতিক রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ আইন চালু করা জরুরি। এর পাশাপাশি, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার বিচার হওয়া উচিত।”
আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, “গণহত্যার জন্য যাদের অনুশোচনা নেই, তাদের রাজনীতি করার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। যারা গণহত্যায় বিশ্বাস করে, তাদের বাতিল করার জন্য সংবিধানে বিশেষ কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।”
আলোচনা সভায় ব্যারিস্টার পার্থ আরও উল্লেখ করেন, সংবিধানে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলো আনা উচিত:
সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ভিত্তিক সংসদ নির্বাচন।
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান সংযোজন।
আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ থেকে ভবিষ্যৎ সরকারকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। ব্যারিস্টার পার্থ বলেন, “আমরা আধুনিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চাই না। যারা ক্ষমতায় আসবে, তাদের উচিত হবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া।”
আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারীরা সংবিধানের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন।