ঢাকা, আগস্ট ১৩ – বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় নতুন নেতৃত্ব হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শেখ হাসিনার আকস্মিক পদত্যাগের পর শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৮৪ বছর বয়সী এই সমাজসেবক এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
তরুণদের স্বপ্ন পূরণের প্রতিশ্রুতি
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নির্বাচিত সাংবাদিকদের সাথে এক ব্যক্তিগত ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূস বলেন, “আমি এটা করছি, কারণ দেশের তরুণেরা এটাই চেয়েছিল। এবং আমি তাঁদের এটি করতে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম। এটা আমার স্বপ্ন নয়, এটা তাঁদের স্বপ্ন। আমি আসলে এটাকে সত্য করতে তাঁদের সাহায্য করছি।”
বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ
গত বৃহস্পতিবার শপথ নেওয়ার পর থেকেই অধ্যাপক ইউনূস দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য কাজ করছেন। আন্দোলনের সহিংসতায় ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কাজটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা ও নতুন আশার সঞ্চার
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “১৫ বছরের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী শাসনের পর যা বাকি ছিল, তা হলো বিশৃঙ্খলা। তবে বিশৃঙ্খলার মুখেও আসলে অনেক আশা আছে।” তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কোটাপদ্ধতি ও বাকস্বাধীনতার মতো বিষয়ে সংস্কারের গুরুত্বের উপর জোর দেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাও তাঁর সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নতুন মুখ ও ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে চলা
প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি রাখা হবে এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। বিচার বিভাগের সংস্কারের দাবিতে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের পর, অধ্যাপক ইউনূস সতর্ক করে বলেন যে, ভবিষ্যতে কিছু সিদ্ধান্ত সবাই পছন্দ না-ও করতে পারে। তবে, তিনি বিশ্বাস করেন যে, সেসব সিদ্ধান্ত আগের চেয়ে ভালো হবে।
অভিজ্ঞতার আলোকে পরিচালনার প্রতিশ্রুতি
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমার কিছু প্রতিষ্ঠান চালানোর অল্পবিস্তর অভিজ্ঞতা আছে। আমি সেই অভিজ্ঞতার যতটা পারি কাজে লাগাব। এমন লোক থাকবে, যারা এটি পছন্দ করবে, যারা এটি অপছন্দ করবে। তবে কাজটা আমাদের করে যেতে হবে।”
দেশের তরুণদের আস্থার প্রতীক হিসেবে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার এখন বিপ্লবী পরিবর্তনের পথে যাত্রা শুরু করেছে।