বিমানবন্দর থানার হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার
শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরিফ হাসানকে তার ঢাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। এ বিষয়ে ডিএমপির উপ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, আরিফ হাসানকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে তদন্তাধীন ছিল এবং বিষয়টি উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনায় নতুন করে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানাবে ডিবি পুলিশ। ডিবি কর্মকর্তারা জানান, মামলাটির পেছনে থাকা প্রমাণাদি এবং আরিফ হাসানের সংশ্লিষ্টতার বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে তদন্ত করার জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।
আরিফ হাসান দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) কার্যনির্বাহী কমিটির মহাসচিব পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তার এই গ্রেপ্তারের ঘটনায় টেলিভিশন চ্যানেল ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হত্যাচেষ্টা মামলাটি একটি স্পর্শকাতর ইস্যু হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে ছিল। তবে আরিফ হাসান এই মামলায় সরাসরি জড়িত কিনা, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিস্তারিত তথ্য জানতে আদালতের কার্যক্রমের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল।
দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আরিফ হাসান দীর্ঘদিন ধরে মিডিয়া জগতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার গ্রেপ্তারের খবরে দেশটির টেলিভিশন এবং মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাটকোর নেতারা এ বিষয়ে দ্রুত একটি জরুরি বৈঠক ডাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মামলাটির তদন্তে বেশ কিছু নতুন তথ্য উঠে এসেছে, যা আরিফ হাসানের ভূমিকা পুনর্মূল্যায়নে সহায়তা করেছে। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, “মামলার তদন্তাধীন বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সামনে আসবে। আমরা প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
কিছু মহল আরিফ হাসানের গ্রেপ্তারের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলছে। তবে ডিবি পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, “এটি একটি নিয়মিত তদন্তের অংশ এবং এর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।”
গ্রেপ্তারের ঘটনায় সাংবাদিক এবং মিডিয়া কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তারা মনে করছেন, এই ঘটনা মিডিয়ার স্বাধীনতার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো এরই মধ্যে এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে আরিফ হাসানের মুক্তি দাবি করেছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) আদালতে শুনানির পর আরিফ হাসানের রিমান্ড মঞ্জুর হলে তদন্ত আরও গভীর হবে। মামলার ভবিষ্যৎ কী হতে পারে এবং এর ফলে টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি কীভাবে প্রভাবিত হবে, তা সময়ই বলে দেবে।