বগুড়ায় উম্মে সালমা হত্যাকাণ্ড: ভাড়াটিয়ার স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার আজিজয়া মঞ্জিলে গৃহবধূ উম্মে সালমার হত্যাকাণ্ডে নতুন তথ্য সামনে এসেছে। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বাসার ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তার হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন। হত্যার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে মাদকের বিরোধ এবং ব্যক্তিগত আক্রোশ।
ঘটনার সূত্র
দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের দিন বাসা থেকে খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন এবং ওয়াইফাই রাউটারের সূত্র ধরে মাবিয়া আক্তারকে আটক করা হয়।
- স্বীকারোক্তি: মাবিয়া জিজ্ঞাসাবাদে জানান, চার মাস আগে উম্মে সালমার বাসায় ভাড়া নেওয়ার পর থেকেই তিনি মাদক ও অনৈতিক কাজ চালাচ্ছিলেন।
- বিরোধ: উম্মে সালমা বিষয়টি জানার পর তাকে বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাবিয়া তার দুই সহযোগী মুসলিম ও সুমন চন্দ্র সরকারকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।
হত্যার বিবরণ
মাবিয়া এবং তার সহযোগীরা উম্মে সালমাকে হত্যা করে মরদেহ একটি ডিপ ফ্রিজে রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
- সম্ভাব্য উদ্দেশ্য: মাবিয়ার অনৈতিক কাজ ফাঁস হওয়ার ভয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
- সহযোগীদের ভূমিকা: মুসলিম এবং সুমন চন্দ্র সরকার সরাসরি হত্যায় অংশগ্রহণ করেন বলে জানা গেছে।
পূর্ববর্তী সন্দেহ ও ভুল আটক
ঘটনার পরপরই নিহতের ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
- প্রাথমিক অভিযোগ: র্যাব জানিয়েছিল, সাদ তার মাকে হাত খরচের টাকার জন্য খুন করে মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রেখেছিল।
- পুলিশের নতুন তদন্ত: পরে মাবিয়ার কার্যকলাপ এবং আলামত উদ্ধারের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা সামনে আসে।
উম্মে সালমার হত্যাকাণ্ডটি পারিবারিক অস্থিরতার চেয়ে ভাড়াটিয়ার অপরাধমূলক কার্যকলাপের ফল হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। পুলিশের তৎপরতা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
এ ঘটনা থেকে বাসার মালিকদের সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়, বিশেষ করে ভাড়াটিয়া নির্বাচনের ক্ষেত্রে। একই সঙ্গে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।