ঢাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও খুনের ঘটনায় পুলিশী তৎপরতা বৃদ্ধি
গত আগস্ট থেকে রাজধানী ঢাকায় অপরাধীদের কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, এবং দখলদারিত্বসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দেখা যায়। পুলিশের তথ্যমতে, এই সময়ে খুন হয়েছেন অন্তত ৬৮ জন, যার মধ্যে শুধু মোহাম্মদপুর এলাকাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন।
১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকায় একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন মহসিন নামে এক ব্যবসায়ী। হঠাৎ করেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালানো হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী রাসেল ও তার দুই সন্তান এই হামলায় যুক্ত ছিলো। অভিযোগে জানা যায়, মহসিন মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় এই হামলার শিকার হন।
ডিএমপি (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ) তথ্য অনুযায়ী, মহানগরীর অন্তত ৫০টি থানার অধীন বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে। শুধু সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসেই এমন বিভিন্ন ঘটনার পরিমাণ দেড়শ’র উপরে। বিভিন্ন স্পটে সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়া ফুটেজে দেখা যায়, কিছু কিশোর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এক ব্যক্তির মালামাল ছিনিয়ে নিতে হামলা চালায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক অধ্যাপক তৌহিদুল হক এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, ঢাকায় বিভিন্ন রদবদল এবং পুলিশ বাহিনীর কৌশলগত পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে অপরাধীরা সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে। পুলিশের জন্যে রাজধানীর পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ফাঁকে অপরাধীরা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকায় অপরাধ প্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে পুলিশ নানা তৎপরতা শুরু করেছে। ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের ডিসি তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে অপরাধ প্রতিরোধে সাঁড়াশি অভিযান এবং চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং পেট্রোল টিম বিভিন্ন স্পটে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ জনগণের সুরক্ষায় আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ডিসি তালেবুর রহমান জনগণকে আতংকিত না হয়ে পুলিশের সাথে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানিয়েছেন। ছিনতাই, চাঁদাবাজির মতো অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত পুলিশের কাছে জানানোর পরামর্শ দেন তিনি। জনগণের সহায়তায় পুলিশের কার্যক্রম আরও সহজতর এবং শক্তিশালী হবে বলে তিনি আশাবাদী।
ডিএমপি আরও জানিয়েছে, অপরাধ দমনে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পুলিশকে সরবরাহ করার জন্যে জনগণের প্রতি আহ্বান করা হচ্ছে। তাদের মতে, তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।