বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন অবশেষে তার নীরবতা ভেঙেছেন। বাংলাদেশ ফুটবল সমর্থকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’ এর পদত্যাগের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি পঞ্চমবারের মতো বাফুফের সভাপতির পদে নির্বাচন করবেন। আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬ অক্টোবর।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’ সংগঠনটি সালাহউদ্দিনের পদত্যাগের দাবি জানায় এবং বাফুফের সামনে দুবার বিক্ষোভও করেছে। রবিবার সংগঠনটি সালাহউদ্দিনকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দেয়। তবে সেই আলটিমেটামকে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে সালাহউদ্দিন বলেছেন, “আমি পদত্যাগ করব না। নির্বাচন করব। নির্বাচন করা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেটা থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন কীভাবে?”
তিনি আরও বলেন, “হ্যাঁ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বললে আমি ব্যাপারটা ভেবে দেখতাম। কিন্তু কিছু ছেলে-পেলে আমাকে হুমকি দেবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। ওরা বলেছে, আমাকে যেখানে পাবে, সেখানেই মারবে। এটা তো ওরা বলতে পারে না।”
কাজী সালাহউদ্দিন প্রশ্ন তুলে বলেন, “ওরা কারা? ফুটবলে ওদের কী অবদান আছে? ওরা বলতে পারে নির্বাচন দেন। আমি তো নির্বাচন দিয়েছি। ৩ অক্টোবর আমার কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আমি ১৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার বোর্ড সেটি পিছিয়ে ২৬ অক্টোবর করেছে। সেই নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে তারা আমাকে হুমকি দিচ্ছে। এটা কী ধরনের কথা! কোন দেশে এসে পড়লাম আমরা!”
তিনি আরো বলেন, “আমি তো অন্যায় কিছু করিনি, কেন সরে যাব? সরে যাওয়ার পথ তো নির্বাচন। নির্বাচনে হারলে আমি চলে যাব। সে পর্যন্ত অপেক্ষা না করে কেন এসব হুমকি দেওয়া হচ্ছে? এতে আমি ভীত নই। প্রয়োজনে আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রটেকশন চাইব। নাগরিক হিসেবে সে অধিকার আমার আছে।”
সালাহউদ্দিন জানান, বাফুফের নেতৃত্ব নিয়ে অগণতান্ত্রিক কিছু করার সুযোগ নেই। করলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হবে। এএফসি থেকেও তাকে সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তবে তিনি জানিয়েছেন, “সব ঠিক আছে। আমি দেশের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে চাই না।”
আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকার করে সালাহউদ্দিন বলেন, “হ্যাঁ, গত সরকারের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমি কখনো মন্ত্রী, এমপি হতে চেয়েছি? চাইনি। আমার কাছে ঢাকার মেয়র হওয়ার অফার ছিল, কিন্তু আমি হইনি। আমি ফুটবল নিয়েই থাকতে চেয়েছি আর সেটা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে। ২০০৮ সালে প্রথমবার যখন নির্বাচন করি, তখন তো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করেছি।”
তিনি আরও জানান, গত ১৫ বছর ধরে তিনি সাফেরও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, সেটাও নির্বাচিত পদ। সালাহউদ্দিন বলেন, “ওরা বলছে, আমি এখন পদত্যাগ না করলে ঘোষণা দিতে হবে, যাতে নির্বাচন না করি। এটা তো জোর করা। নির্বাচন করব না, এই প্রতিশ্রুতি জোর করে আদায় করা যায় না।”