সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামে নিখোঁজের সাত দিন পর শিশুকন্যা মুনতাহা আক্তার জেরিনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে তার নিজ বাড়ির পাশের পুকুরে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তার দেহের সন্ধান পাওয়া যায়।
মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ অভিযোগ করেন, তার কন্যাকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেছিলাম। দীর্ঘ সাত দিন কোনো সন্ধান না পেয়ে হতাশ ছিলাম, কিন্তু আজ ভোরে বাড়ির পাশের পুকুরে তার নিথর দেহ পাওয়া যায়।”
কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল আওয়াল সংবাদমাধ্যমকে জানান, রোববার ভোর ৪টার দিকে মুনতাহার মরদেহ পাওয়া যায়। তার গলায় রশি পেঁচানো ছিল এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। “লাশ দেখে বোঝা যাচ্ছে, তাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে,” বলেন ওসি আওয়াল।
গত ৩ নভেম্বর সকালে মেয়ে মুনতাহা ও ছোট ছেলেকে নিয়ে একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরেন শামীম আহমদ। এরপর মুনতাহা প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলতে যায়। বিকেল ৩টার দিকে তাকে খুঁজে না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবেশী শিশুরাও মুনতাহার বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
মুনতাহার সন্ধানদাতার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। প্রবাসী কিছু ব্যক্তি এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। এ ছাড়া সিলেটের নারী সমাজকর্মী ফারমিস আক্তার স্বর্ণের চেইন পুরস্কারের ঘোষণা দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
নিখোঁজের পর থেকেই পরিবারের সদস্যরা মুনতাহাকে অপহরণের শিকার হতে পারে বলে সন্দেহ করছিলেন। তবে নির্দিষ্ট কারও ওপর সন্দেহ ছিল না। পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে, এবং দ্রুতই অপরাধীদের খুঁজে বের করার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
নিহত মুনতাহার পরিবার এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না যে তাদের ছোট্ট মেয়ে এমন নির্মমভাবে প্রাণ হারিয়েছে। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে, এবং সবাই প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে সোচ্চার।