মাদারীপুর সদর উপজেলায় ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রকল্প পাঁচ বছরেও সম্পন্ন হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান “ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স” এক কোটি ২৮ লাখ টাকা বিল নিয়ে মসজিদের মূল কাজ সম্পন্ন না করেই প্রকল্প ছেড়ে দিয়েছে। ফলে স্থানীয় মুসল্লি ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে, তারা দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ২০১৯ সালের মে মাসে মাদারীপুর সদর উপজেলার ভেতরে তিনতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। এক বছরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০২১ সালে শুধুমাত্র পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়। এরপর থেকে প্রকল্প এলাকাটি অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে। ঝোপঝাড় ও জলাবদ্ধতায় মসজিদের স্থানটি অচেনা রূপ ধারণ করেছে।
জমির অবস্থান নিয়ে স্থানীয়দের আপত্তির কারণে প্রকল্পের কাজ আটকে যায়। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন মসজিদটির স্থান পরিবর্তনের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে একটি চিঠি প্রেরণ করেন। এই প্রস্তাবনায় নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়, আর সেই সুযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুধু পাইলিংয়ের কাজ দেখিয়ে এক কোটি ২৮ লাখ টাকা বিল তুলে নেয়।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাদারীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহরিয়ার হোসেন জানান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পূর্বের নির্ধারিত স্থানেই মসজিদের কাজ শুরু হবে। আগের ঠিকাদার কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় নতুন ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে এবং শিগগিরই নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
সদর উপজেলার পুরোনো মসজিদটি ভেঙে সেখানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবি ছিল স্থানীয় মুসল্লিদের। কিন্তু কর্তৃপক্ষ উপজেলার ভিতরে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করায় সাধারণ মানুষ ও মুসল্লিদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। মুসল্লিরা এই বিলম্ব ও দুর্নীতির তদন্ত করে দায়ীদের বিচার দাবি করেছেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাদারীপুর উপপরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, অন্যান্য জেলার মডেল মসজিদগুলোর কাজ সম্পন্ন হলেও মাদারীপুর সদর উপজেলার মসজিদটি সঠিক স্থানে না হওয়ায় এখনো সম্পন্ন হয়নি। তিনি বলেন, “উপযুক্ত স্থানে দ্রুত মসজিদের কাজ শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
মাদারীপুর সদর উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণ কার্যক্রম দীর্ঘদিনের বিলম্ব ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিল তোলার ঘটনায় স্থানীয়রা হতাশ ও ক্ষুব্ধ।