অভিষেক ও ঐশ্বরিয়ার দাম্পত্য জীবন: নিমরাত কৌরের সঙ্গে পরকীয়ার গুঞ্জন কী সত্য?
বলিউডের জনপ্রিয় তারকা জুটি অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের সম্পর্ক নিয়ে সম্প্রতি অনেক গুঞ্জন উঠে এসেছে। এই তারকা দম্পতির দীর্ঘ ১৭ বছরের দাম্পত্য জীবন অনেকেই উদাহরণ হিসেবে বিবেচনা করলেও, সম্প্রতি নানা কারণে তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে বলে দাবি করছেন অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে কৌতূহল আরও বেড়েছে অভিষেক ও অভিনেত্রী নিমরাত কৌরের মধ্যে সম্পর্কের জল্পনা নিয়ে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘দসভি’ সিনেমার শুটিং সেট থেকেই অভিষেক ও নিমরাতের মধ্যে বন্ধুত্ব এবং ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। আর এই কারণেই নাকি ঐশ্বরিয়া ও অভিষেকের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সম্পর্ক শুরু হয় ২০০৬ সালে, ‘উমরাও জান’ সিনেমার শুটিং সেটে। তাদের সম্পর্ক দ্রুত ঘনিষ্ঠতায় পৌঁছে এবং ২০০৭ সালে এই জুটি বিয়ে করেন। এর পর ২০১১ সালে তাদের জীবনে আসে একমাত্র কন্যা আরাধ্যা বচ্চন। এই দীর্ঘ সময়ে তারা বলিউডের অন্যতম প্রভাবশালী দম্পতি হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। তবে, সম্প্রতি অভিষেক ও ঐশ্বরিয়ার সম্পর্কের অবস্থা নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে, বিশেষত অভিষেকের পরকীয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যা তাদের সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলছে।
অনেকের দাবি, অভিষেক বচ্চন ও নিমরাত কৌরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই তাদের দাম্পত্য জীবনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মিডিয়ায় এই গুঞ্জন শুরু হয় ‘দসভি’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় থেকেই। বিশেষ করে ঐশ্বরিয়া রাই ভক্তরা এই বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছেন না এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় নিমরাত কৌরকে সরাসরি আক্রমণ করছেন। এমনকি কেউ কেউ নিমরাতকে ‘ঘর ভাঙানি’ বলে মন্তব্যও করছেন।
সম্প্রতি হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় যে, ‘সিটাডেল হানি বানি’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে নিমরাত কৌর অভিষেকের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন। নিমরাত সরাসরি এই গুঞ্জন নাকচ করে দিয়ে বলেন যে তিনি একেবারেই সিঙ্গেল এবং কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত নন। তিনি এমনকি মজার ছলে সিঙ্গেল মেয়েদের জন্য কিছু ট্রাভেলিং টিপসও শেয়ার করেন। তবে নিমরাতের এই মন্তব্যের পরও নেটিজেনদের কটাক্ষ থামেনি; তারা তাকে নিয়ে সমালোচনা করে চলেছেন।
এই গুঞ্জনের মধ্যেও অভিষেক বচ্চন এবং ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন তাদের সম্পর্ক নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। কিছু নেটিজেন ধারণা করছেন, এই নীরবতা হয়তো কোনো সমস্যারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। অন্যদিকে, কেউ কেউ মনে করছেন, তারা হয়তো গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে তাদের ব্যক্তিগত জীবনকে আরো বেশি গোপন রাখার কৌশল অবলম্বন করছেন।
ঐশ্বরিয়া রাইয়ের ৫১তম জন্মদিনেও অভিষেক তার স্ত্রীকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো শুভেচ্ছা বার্তা দেননি। গত বছর ঐশ্বরিয়ার জন্মদিনে অভিষেক তার ছবি শেয়ার করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন, যা তাদের ভক্তদের জন্য ছিল একটি বিশেষ মুহূর্ত। কিন্তু এবছর তার এই নীরবতা অনেকের মধ্যে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই নীরবতা হয়তো তাদের বিচ্ছেদের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত।
বচ্চন পরিবার বরাবরই তাদের পারিবারিক বিষয়গুলো গোপন রাখার চেষ্টা করে। অভিষেক ও ঐশ্বরিয়ার সম্পর্ক নিয়ে এই গুঞ্জন শুরু হলেও বচ্চন পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তাদের নীরবতাও বিষয়টিকে ঘিরে কৌতূহল ও সংশয়কে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
অভিষেক ও ঐশ্বরিয়ার সম্পর্কের মধ্যে দূরত্বের গুঞ্জন শুরু হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন নিমরাত কৌর। ঐশ্বরিয়ার ভক্তরা এই গুঞ্জন নিয়ে তাকে আক্রমণ করছেন এবং বিভিন্ন মন্তব্যের মাধ্যমে তাকে ‘ঘর ভাঙানি’ বলে অভিহিত করছেন। যদিও নিমরাত বিষয়টি নিয়ে নিজেকে সাফাই দিয়েছেন, তবুও সমালোচনা থামছে না।
বলিউডে তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন ওঠা কোনো নতুন বিষয় নয়। অনেক ক্ষেত্রেই গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর এবং গুঞ্জনের মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে। অভিষেক ও ঐশ্বরিয়া তাদের সম্পর্ক নিয়ে মিডিয়ার সামনে খুব কমই আলোচনা করেন। তাদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো স্পষ্ট বার্তা না থাকায় এই গুঞ্জন কেবল আরও বাড়ছে।
অভিষেক ও ঐশ্বরিয়া তাদের দাম্পত্য জীবন নিয়ে বরাবরই শক্ত অবস্থানে ছিলেন এবং বিভিন্ন গুঞ্জনকে অগ্রাহ্য করে নিজেদের সম্পর্ককে সুরক্ষিত রেখেছেন। ভক্তরা এই তারকা দম্পতির সুখী জীবনের প্রত্যাশা করেন, তবে বর্তমান গুঞ্জন তাদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের সম্পর্ক নিয়ে বর্তমানের এই গুঞ্জন কতটুকু সত্য তা সময়ই বলবে। তবে মিডিয়ার আলোচনার মধ্যেও তাদের নীরবতাই বোঝাচ্ছে যে, তারা হয়তো নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনকে সুরক্ষিত রাখতে চান এবং ভক্তদের কৌতূহল মেটাতে চান না।