ঢাকা, ৪ নভেম্বর: টঙ্গীর কেরাণিটেক বস্তিতে র্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় শুরু হওয়া এই অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বস্তির কয়েকটি ঘর থেকে মাদক, নগদ অর্থ ও অস্ত্রসহ মাদক কারবারে জড়িত সন্দেহে ৪০ জনকে আটক করেছে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চালানো এই অভিযানে র্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশসহ প্রায় ৫৫০ জন সদস্য অংশ নেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ যৌথ দল কেরাণিটেক বস্তিতে মাদকদ্রব্য ও অন্যান্য অবৈধ সামগ্রীর জন্য বিভিন্ন ঘরে তল্লাশি চালায়। অভিযানে গাঁজা, ফেন্সিডিল, ইয়াবা, দেশীয় অস্ত্র এবং নগদ ২২ লাখ ৮১ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কেরাণিটেক বস্তিতে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল বেশ কিছু সংঘবদ্ধ চক্র। স্থানীয় ও অভ্যন্তরীণ সূত্রে পাওয়া গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানায়, এ ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করতে নিয়মিত নজরদারির অংশ হিসেবে অভিযান চালানো হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া র্যাবের এক কর্মকর্তার মতে, “এই বস্তিটি দীর্ঘদিন ধরেই মাদক কারবারিদের জন্য একটি নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা কেরাণিটেকে অভিযানের প্রস্তুতি নেই। এই অভিযানে সফলভাবে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, নগদ অর্থ এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।”
সেনাবাহিনীও জানায়, এ ধরনের যৌথ অভিযান মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কার্যকলাপ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখবে। র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সহযোগিতায় পরিচালিত এই অভিযান আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আটককৃত ৪০ জনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তাদের মধ্যে কিছু সদস্য দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণসহ আদালতে প্রেরণ করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
অভিযানের পর বস্তিবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কিছু স্থানীয় বাসিন্দা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন, এতে করে এলাকায় নিরাপত্তা ও শান্তি ফিরে আসবে। অন্যদিকে, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কারণে কেরাণিটেক বস্তির ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ।
এই যৌথ অভিযান মাদক নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কেরাণিটেক বস্তির মতো এলাকাগুলোতে নিয়মিত নজরদারি এবং অভিযান চালানো হলে মাদক ব্যবসার মতো অবৈধ কার্যকলাপ কমে আসবে বলে আশাবাদী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।