বাংলাদেশের নারী ফুটবলে নতুন দিগন্তের সূচনা: ইউরোপীয় ক্লাবের আগ্রহ ও সম্ভাবনা
সাম্প্রতিক সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিপক্ষে ফাইনালে গর্বিত এক মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা। তার অতুলনীয় পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফের শিরোপা জিতেছে। এই জয়ের মধ্যে দিয়ে সবার নজর কেড়ে নেয়া ঋতুপর্ণাকে নিয়ে চারদিকে চলছে প্রশংসা। এর মধ্যে একটি সুসংবাদও সামনে এসেছে—তিনি ভারতের পাশাপাশি ইউরোপের দুটি ক্লাব থেকে খেলার প্রস্তাব পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ঋতুপর্ণা চাকমার পারফরম্যান্স সত্যিই ছিল অসাধারণ। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করার পাশাপাশি তিনি তার দলকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ ধরনের ক্রীড়া সাফল্য নারীদের ফুটবলকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি একটি জাতীয় দৈনিককে সাক্ষাৎকারে জানান, এই টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়েই তিনি ভারতের একটি ক্লাব এবং ইউরোপের একটি ক্লাব থেকে প্রস্তাব পেয়েছেন। এটি তার এবং দেশের ফুটবলের জন্য এক বড় অর্জন।
ভারতের ক্লাবগুলো ইতিমধ্যে বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের প্রতিভায় আকৃষ্ট হয়েছে। এর আগেও জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ভারতের সেথু এফসি এবং কিকস্টার্ট এফসির হয়ে খেলেছেন, যা তাকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে নতুন অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ দেয়। সাবিনার এই পথচলার পর এবার ঋতুপর্ণার প্রস্তাব প্রমাণ করছে যে বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের প্রতিভা প্রমাণ করতে সক্ষম।
বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের জন্য ইউরোপীয় ক্লাব থেকে প্রস্তাব পাওয়া একটি বিরাট মাইলফলক। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো নারী ফুটবলার ইউরোপে খেলার সুযোগ পাননি। ঋতুপর্ণার জন্য ইউরোপে খেলার সম্ভাবনা বাংলাদেশের ফুটবলের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থিতি আরো শক্তিশালী করবে। ইউরোপের ফুটবল লিগগুলোতে খেলার সুযোগ পাওয়া শুধুমাত্র ঋতুপর্ণার ক্যারিয়ারেই নয়, বরং বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলকে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনায় আনবে।
ঋতুপর্ণা তার ক্লাবের নাম এখনও গোপন রাখতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, “এটা এখনই বলা বারণ আছে। সব কিছু ঠিক হলে আনুষ্ঠানিকভাবেই জানাব।” এমন প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যায়, তিনি এই সুযোগটি নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক এবং নিশ্চিত হতে চান যে এটি তার ক্যারিয়ারের জন্য সঠিক পদক্ষেপ হবে।
ঋতুপর্ণার এই অর্জন প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা রয়েছে। ভারত এবং ইউরোপের ক্লাব থেকে প্রস্তাব পাওয়া কেবলমাত্র একটি স্বীকৃতি নয়, বরং এটি বাংলাদেশের ফুটবলে নারীদের অবদানের একটি বড় উদাহরণ। এর ফলে দেশের নারী ফুটবল আগামীতে আরও উন্নত হওয়ার আশা করছে।
ঋতুপর্ণা চাকমার জন্য এই প্রস্তাব পাওয়া নিঃসন্দেহে তার ক্যারিয়ারের এক গৌরবময় অধ্যায়। এটি বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য একটি নব দিগন্তের সূচনা হিসেবে দেখা যেতে পারে।