চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে নিয়োগ পাওয়া ৫৮৯ জন প্রবেশনারি কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল)। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) প্রত্যেককে পৃথক চিঠির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং দক্ষতা ও সক্ষমতার মান নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছর চট্টগ্রামের পটিয়া অঞ্চল থেকে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ও সনদ যাচাই ছাড়া এই কর্মীরা নিয়োগ পান। এসআইবিএলের নিয়মিত নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়িয়ে এসব কর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল বলে জানা যায়। পটিয়ার অনেক বাসিন্দার জন্য বিশেষভাবে স্থাপন করা চাকরির বক্সে সিভি জমা দেওয়ার মাধ্যমে তারা এ সুযোগ পেয়েছিলেন। সূত্রমতে, চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ ২০১৭ সালে ব্যাংকটির মালিকানা গ্রহণের পর এই ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু হয়। বর্তমানে ব্যাংকটির মোট জনবলে ৪ হাজার ৭৫০ জন কর্মী রয়েছে, এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই।
এসআইবিএলের এক কর্মকর্তার তথ্য মতে, এ ধরনের অনিয়মিত নিয়োগের কারণে অনেক শাখায় কর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত বসার স্থানও পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক শাখায় কর্মী সংখ্যা অতিরিক্ত হওয়ার কারণে কার্যক্রম পরিচালনায় জটিলতা দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত নিয়োগের ফলে শাখাগুলোতে সেবার মানও ব্যাহত হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকটির উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা শৃঙ্খলা ও দক্ষতার ভিত্তিতে কর্মীসংখ্যা পুনঃবিন্যাসের সিদ্ধান্তে উপনীত হন।
এসআইবিএল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি শৃঙ্খলা এবং দক্ষতার মান নিশ্চিত করতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনতে উদ্যোগী হয়েছে। এ উদ্যোগের আওতায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়োগ পাওয়া ৫৮৯ জন প্রবেশনারি কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এসআইবিএলের অন্য এক কর্মকর্তা জানান, “কোনো ধরণের যোগ্যতা যাচাই ছাড়াই নিয়োগ দেয়া এসব কর্মী অপ্রয়োজনীয় এবং প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ ধরনের কর্মীছাঁটাই শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং স্থায়ী কর্মী নিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”
চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ জানান, পটিয়ায় এস আলম গ্রুপের উদ্যোগে সিভি জমা দেয়ার পর তারা নিয়োগ পান এবং এতে স্থায়িত্বের নিশ্চয়তা ছিল না। তবে নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে তারা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন।
এসআইবিএলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, পটিয়া অঞ্চলের এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া সংস্কার করে দক্ষ এবং প্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরোপিত এই নতুন বিধিনিষেধ এবং শৃঙ্খলা প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যাংকটির পরিচালনা আরও মজবুত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।