২০২২ সালের পর এই প্রথম বেসরকারি ময়দার মিলে সরকারি গম বরাদ্দ ও পেষাই নীতিমালা ২০২২(সংশোধিত)কার্যকর হচ্ছে। বর্তমান সচিব মাকসুদুল হাসান ও খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আব্দুল খালেক যোগদানের পর খাদ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য অধিদপ্তরের স্বচ্ছতা আনয়নের জন্য ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছেন। ০৩ অক্টোবর, ২০২৪ বর্তমান সচিব খাদ্য সচিব হিসেবে খাদ্য মন্ত্রনালয়ে যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পরপরই সকল কাজে স্বচ্ছতা আনায়নের জন্যে ব্যাপক কাজ করছেন। যার ফলশ্রুতিতে বেসরকারি ময়দার মিলের সরকারি গম বরাদ্দ ২০২২ (সংশোধিত) নীতিমালা অনুসরণ করে নভেম্বর ২০২৪ এর চাল আটা বিক্রির অনুমোদন প্রধান করেন এবং অনুমোদনের সময় পূর্বে জারিকৃত সকল পরিপত্র বাতিল করে নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরন করে ঢাকা মহানগর ও অন্যান্য সকল জেলায় বেসরকারী ময়দার মিলগুলোতে গম বরাদ্দ প্রদানে আদেশ জারি করে। সচিব মহোদয়ের এ উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। এ কাজের দ্বারা বহু মিলের স্বার্থ রক্ষিত হল। খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আব্দুল খালেক ৩১ অক্টোবর তারিখে সচিবের চিঠি সকল জেলায় এনডোর্স করে প্রেরন করেন।
সাবেক খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন এনডিসি ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে বেসরকারি ময়দার মিলে সরকারি গম বরাদ্দ ও পেষাই নীতিমালা ২০২২(সংশোধিত) প্রনয়ণ করেন। উক্ত নীতিমালার ৩.১ ধারাতে বলা হয়েছে ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত তালিকাভুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গম থেকে আটা উৎপাদনে সক্ষম ময়দার মিলের অনুকূলে প্রধান নিয়ন্ত্রণ ঢাকা রেশনিং, ঢাকা এর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গম বরাদ্দ করবেন এবং ৩.৫ ধারাতে বলা হয়েছে স্ব স্ব জেলার তালিকাভুক্ত মিল সমূহকে গম বরাদ্দ দেওয়া হবে। যদি কোন জেলায় মিল না থাকে বা পেষণ ক্ষমতা কম থাকে তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক পার্শ্ববর্তী জেলার ময়দার মিলকে গম বরাদ্দের প্রস্তাব মহাপরিচালক খাদ্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করবেন কিন্তু এসব ধারা একটিও অনুসরণ না করে ঢাকা মহানগর ও অন্যান্য জেলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক মিল থাকা সত্ত্বেও নারায়নগঞ্জ জেলার মিলকে গম বরাদ্দ দিয়ে আসছিল। এসব মিলগুলোকে চুক্তি করে আওয়ামী দোসর নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী পরিচালনা করত। যিনি ছিলেন শামীম ওসমানের সহযোগী ও ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষের শক্তি এবং আক্রমণকারী।
তার প্রভাবের কারণে খাদ্য অধিদপ্তরে অন্য কোন ব্যবসায়ী প্রবেশও করতে পারতো না। সাবেক সচিব নিজে নীতিমালা প্রনয়ণ করে নিজেই নীতিমালা বহির্ভূত কাজ করেছেন। তিনি আওয়ামী দোসর নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে বিপুল টাকা গ্রহণ করে ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ এ পরিপত্র জারি করে ।নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে নারায়ণগঞ্জ জেলার মিলারদেরকে অনৈতিক গম বরাদ্দ দিয়েছেন যা বেআইনি এবং দুর্নীতির সামিল।
নীতিমালা বহির্ভূত এ কাজের জন্যে নিজ জেলার মিলগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর সাবেক খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন এনডিসি শামীম ওসমানের সহযোগী ব্যবসায়ীর সাথে মিলে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের মাসের গম বরাদ্দ আগের মত নীতিমালা বর্হিভূত করেই বরাদ্দ প্রদান করেন । ঐ ব্যবসায়ী সাবেক সচিবের সকল দুর্নীতির সহযোগীতা এবং টাকা পাচারের মূল হোতা। বর্তমানে ঐ সচিবকে সরকার জনস্বার্থে ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে অব্যাহতি প্রদান করেছেন।
এবিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট হলেও সরবরাহ বন্টণ ও বিপনণ বিভাগের পরিচালক আব্দুস সালামের সহযোগিতায় রিট অর্ডার ভায়োলেট করে কার্যক্রম চালান এবং ব্যবসায়ীকে সাহায্য করতে সকল সহায়তা রাখেন।
মিল মালিকদের প্রতিক্রিয়া:
বেসরকারি মিল মালিকরা এই নীতিমালার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তারা খদ্য সচিব ও খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন এবং বলেছেন ৫ আগস্টের পর সরকার দুর্নীতি মুক্ত যে দেশ গঠন করতে চাচ্ছেন এই নীতিমালার প্রয়োগ তারই প্রতিফলন। তারা আশা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য অধিদপ্তর আওয়ামী দোসর ব্যবসায়ীদের প্রভাব মুক্ত হবে এবং দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গঠন হবে।