নাটোরে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ৫ আগস্টের পর থেকে ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সশস্ত্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অস্ত্র লুটের ঘটনার পর অন্তর্বর্তী সরকার সব ধরনের বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এর ফলে, ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সকৃত অস্ত্রও জমা পড়ে। বর্তমানে জেলায় প্রায় ৩০টি ব্যাংক শাখায় নিরাপত্তাকর্মীরা অস্ত্র ছাড়া ডিউটি করছেন, যা ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে।
ব্যবসায়ী উত্তম প্রামাণিক নাটোর সদরের একজন নিয়মিত ব্যাংক গ্রাহক, যিনি ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য নিয়মিত বিভিন্ন ব্যাংক শাখায় যান। তিনি জানান, “সারাদিনের লেনদেনের টাকাটা ব্যাংকে জমা রাখি, কিন্তু এখন ব্যাংকের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নেই। এমন পরিস্থিতিতে আমরা টাকাটা ব্যাংকে রাখবো কীভাবে?” শুধু তিনিই নন, তার মতো অন্যান্য গ্রাহকরাও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
নিরাপত্তাকর্মীরাও অস্ত্র ছাড়া দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, “অস্ত্র ছাড়া ব্যাংকে নিরাপত্তা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমরা নিজেরাই ডিউটির সময় নিরাপত্তার অভাবে ভুগছি।”
নাটোর ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজার ফজলুর রহমান জানান, “সরকার সব ধরনের বৈধ ও অবৈধ অস্ত্র যাচাইয়ের জন্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।” একই কথা বলেন নাটোর যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ, যিনি আশা প্রকাশ করেন যে, “ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা স্বার্থে প্রশাসন দ্রুত জমা দেওয়া অস্ত্রগুলো ফেরত দেবে।”
এমন পরিস্থিতির মাঝেও ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন নাটোরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন। তিনি বলেন, “ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যদি অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রয়োজন হয়, তা জানালে আমরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো।”
উল্লেখ্য, নাটোরে বর্তমানে প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যাংক শাখায় সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নেই। ফলে গ্রাহক ও নিরাপত্তাকর্মীরা উভয়েই নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
—