কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদে একটি বন্যহাতির বাচ্চা মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে ইসলামাবাদ গজালিয়ার সাতঘরিয়াপাড়া সংলগ্ন গর্জনতলা নামক স্থান থেকে হাতিটির মরদেহ উদ্ধারের মাধ্যমে নিশ্চিত করেন ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন আহমেদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে একদল কাঠুরিয়া লাকড়ি সংগ্রহ করতে গেলে হাতিটিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। খবরটি তারা বনবিভাগকে জানালে রাজঘাট বিট ও ফুলছড়ি রেঞ্জের কর্মীরা সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।
বনবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মৃত হাতিটি একটি পুরুষ এবং এর বয়স আনুমানিক দেড় থেকে দুই বছর। হাতিটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত চিহ্ন দেখা গেছে, যা মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিচ্ছে।
রাজঘাট বিট কর্মকর্তা শাহ্ আলম জানান, গত দুদিন ধরে একটি অসুস্থ বাচ্চা হাতির খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল এবং বনবিভাগের পক্ষ থেকে হাতিটির চিকিৎসা চালানো হয়। তবে চিকিৎসার কোনো উন্নতি না হওয়ায় হাতিটির মৃত্যু হয়। তিনি আরও বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের মাধ্যমে হাতিটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।
গজালিয়া সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাস্টার কামাল উদ্দীন জানান, হাতিটি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় বনবিভাগের চিকিৎসা সেবা দেয়া হলেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। তবে তার মতে, বাচ্চা হাতিটি সম্ভবত অন্য হাতির আক্রমণের শিকার হয়েছিল, যা তার মৃত্যুর অন্যতম কারণ হতে পারে।
এর আগেও কক্সবাজার অঞ্চলে হাতির মৃত্যু নিয়ে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। গত ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের চুনতি অভয়ারণ্যের কাছে রেল লাইনে একটি হাতি গুরুতর আহত হয় এবং পরে কক্সবাজারের ডুলাহাজরা সাফারি পার্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর এমন ঘটনাগুলো স্থানীয় বন বিভাগের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বন্যহাতির সংখ্যা কমতে থাকায় এসব ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে এই হাতির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে, যা বনবিভাগের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে সহায়ক হবে।