হজে যাওয়ার জন্য প্রাক-নিবন্ধনের শেষ সুযোগ: কীভাবে সম্পন্ন করবেন নিবন্ধন?
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-১ অধিশাখা থেকে প্রকাশিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের সময়সীমা ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এই সময়সীমার মধ্যে প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রীদের তিন লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, ২৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তিরা ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
হজের নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে যারা উদ্বিগ্ন ছিলেন, তাদের জন্য এটি একটি স্বস্তির খবর। আগে নিবন্ধনের শেষ সময়সীমা ছিল ২৩ অক্টোবর, যা পরবর্তীতে ধর্ম মন্ত্রণালয় বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর করেছে। এতে করে আরও বেশি সংখ্যক হজযাত্রী নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন এবং সময়মতো তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবেন।
প্রাথমিক নিবন্ধন করতে হলে প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিদের নির্ধারিত তিন লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে। এ ছাড়া, এই সময়ের মধ্যে যারা প্রাক-নিবন্ধন করেননি, তারা প্রাক-নিবন্ধন এবং প্রাথমিক নিবন্ধন একসঙ্গে করতে পারবেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে যে, হজযাত্রীরা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এই টাকা জমা দিতে পারবেন। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলবে। তবে যারা নিবন্ধন করবেন, তাদের অবশ্যই প্রাক-নিবন্ধন করে প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে, তা না হলে তারা হজে যেতে পারবেন না।
আগামী বছর ২০২৫ সালের হজে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রীর কোটা নির্ধারণ করেছে সৌদি সরকার। এই তথ্য হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নিশ্চিত করেছে।
হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ২৩ জুন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। তবে, সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কতজন হজযাত্রী যাবেন, তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী জানুয়ারিতে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের হজ চুক্তি হবে।
২০২৪ সালে হজে যাওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৮৩ হাজার ২১৮ জন হজযাত্রী। এদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৩২৩ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন রয়েছেন। এই সংখ্যা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, এখনো অনেকেই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেননি।
নিবন্ধন সংখ্যা বিবেচনায় দেখা যাচ্ছে, নির্ধারিত কোটার তুলনায় হজযাত্রীর সংখ্যা এখনো কম। তাই, যারা হজে যেতে চান কিন্তু এখনো নিবন্ধন করেননি, তাদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা। দ্রুত নিবন্ধন সম্পন্ন না করলে নির্ধারিত কোটায় জায়গা পাওয়া কঠিন হতে পারে।
সৌদি সরকারের নির্ধারিত কোটার ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার আগামী বছরের হজের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। হজযাত্রীদের নিরাপত্তা, যাতায়াত, আবাসন এবং অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং সৌদি সরকার যৌথভাবে কাজ করবে।
আগামী জানুয়ারিতে হজ চুক্তি হওয়ার পর, সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনার মধ্যে হজযাত্রী সংখ্যা চূড়ান্ত করা হবে। সাধারণত, মোট কোটার একটি অংশ সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকী অংশ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়।
যারা প্রাথমিক নিবন্ধন করতে যাচ্ছেন, তাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা উচিত। প্রথমত, নির্ধারিত সময়ে টাকা জমা দিতে হবে এবং প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যারা এখনো প্রাক-নিবন্ধন করেননি, তাদের দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। কারণ, সময় শেষ হয়ে গেলে নিবন্ধনের সুযোগ পাওয়া যাবে না।
হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য সনদ, পাসপোর্ট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা উচিত। হজের যাত্রার আগে সব ধরনের তথ্য যাচাই করে নিতে হবে, যেন কোনো ধরনের ঝামেলা বা সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়।
বর্তমানে হজ নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার সহজীকরণ করেছে। অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা হজযাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্ন হজ এজেন্সি নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। সরকারি ওয়েবসাইট এবং হজ এজেন্সির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য সহজেই পাওয়া যাচ্ছে, যা হজযাত্রীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
বাংলাদেশ থেকে ২০২৫ সালের হজ যাত্রায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি বিশেষ সুযোগ। যারা এখনো নিবন্ধন করেননি, তাদের উচিত দ্রুত প্রাক-নিবন্ধন ও প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করা। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে হজে যাওয়ার সুযোগ নাও পেতে পারেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং হাবের নির্দেশনা অনুযায়ী, হজযাত্রীদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।