ঢাকা: স্বাধীনতার পর থেকে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) অনুযায়ী এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময় হত্যা, নির্যাতন, সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। বিশেষ করে গত ১৫ বছরের শাসনামলে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে, যা আদালতে প্রমাণিতও হয়েছে। সর্বশেষ ১৫ জুলাই শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে শতাধিক নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে।
সরকারের দাবি, ছাত্রলীগ এখনও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে, যা সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপের দাবি রাখে। তাই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, এ নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস:
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার খবর প্রকাশের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের সঞ্চার হয়। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীরা উল্লাস করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তাদের মধ্যে “এই মুহূর্তে খবর এলো, সন্ত্রাসী লীগ নিষিদ্ধ হলো”, “ক্যাম্পাস সন্ত্রাসমুক্ত হলো”, এবং “হৈ হৈ রৈ রৈ, সন্ত্রাস লীগ গেলি কই” শীর্ষক স্লোগান শোনা যায়।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ নিষেধাজ্ঞা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের এক মাইলফলক এবং এর মাধ্যমে দেশের শিক্ষাঙ্গন সন্ত্রাসমুক্ত হবে।