সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক সড়কের লামাকাজি সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে বুধবার (২৩ অক্টোবর) ভোর থেকে পরিবহন ধর্মঘট চলছে। সুনামগঞ্জ পরিবহন মালিক সমিতি এবং পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে এই ধর্মঘটের কারণে ছাতক, জামালগঞ্জ, জগন্নাথপুর, দিরাইসহ ছয়টি রুটে মিনিবাস ও বাস চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। ধর্মঘটের ফলে সাধারণ যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন, বিশেষত দূরবর্তী স্থান থেকে আগত যাত্রীদের বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায় সিএনজি বা অটোরিকশা ব্যবহার করতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া জানান, প্রায় ৪০ বছর ধরে সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের লামাকাজি সেতুতে টোল আদায় চলছে। চলতি বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার উদ্যোগে সেতুটিতে টোল আদায় কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। তবে, ২ মাস ৫ দিন পর সিলেটের সড়ক ও জনপথ বিভাগের উদ্যোগে পুনরায় টোল আদায়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এই টেন্ডার বাতিলের দাবিতেই পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা সম্মিলিতভাবে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।
পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নুরুল হক বলেন, “সিলেটের লামাকাজি ও শান্তিগঞ্জের ছয়হারা সেতুতে প্রতিবছর টোল আদায়ের কারণে যানজট তৈরি হয়। দীর্ঘদিন ধরে টোল পরিশোধের ফলে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের আয় সংকুচিত হয়েছে। টোল আদায় বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
পরিবহন মালিক সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ জানান, সেতুর মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও টোল আদায় বন্ধ করা হয়নি, যা তাদের আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কারণে তারা টোল আদায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
ধর্মঘটের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। যাত্রীরা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে সিএনজি, অটোরিকশা, অথবা অন্য ছোট যানবাহনে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তাছাড়া, ধর্মঘটের কারণে সুনামগঞ্জের অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃজেলা যোগাযোগ ব্যবস্থাও অচলাবস্থায় পড়েছে।
স্থানীয় যাত্রী এবং পরিবহন সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, টোল আদায় বন্ধ করা গেলে যানজট সমস্যা হ্রাস পাবে এবং পরিবহন খরচ কমবে। অনেকেই এই ধর্মঘটকে যৌক্তিক বলে সমর্থন করেছেন এবং দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জের পরিবহন ধর্মঘট ও লামাকাজি সেতুতে টোল আদায় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনের আশঙ্কা করছেন ধর্মঘটকারীরা।