ফেনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান প্রকাশ বোমা কামরুলকে যৌথবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে ফেনী সদর উপজেলার কাজীরবাগ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপুর এলাকা থেকে যৌথবাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত কামরুল হাসান কাজীরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের প্রচার সম্পাদক।
যৌথবাহিনীর সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কামরুল হাসান সশস্ত্র হামলা চালান। তার এই হামলার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এটি সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে। ভিডিওতে দেখা যায়, হামলার সময় কামরুল মুখে কাপড় বেঁধে অস্ত্রসহ উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় পুলিশের তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথবাহিনীর ৪১ মিডিয়াম রেজিমেন্টের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে কামরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আন্দোলন চলাকালীন সময়ে কামরুল হাসান ও তার সহযোগীরা ছাত্রদের ওপর আকস্মিকভাবে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ছাত্রদের উপর ধারালো অস্ত্র, লাঠি এবং অন্যান্য সশস্ত্র উপকরণ নিয়ে আক্রমণ করে। এতে অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, কামরুল হাসান এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন এবং তিনি নিজেই সরাসরি এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে হামলাকারীরা ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে এবং আন্দোলন দমাতে কাজ করেছিল।
হামলার পরের দিনই সিসিটিভি ফুটেজের একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ফুটেজে দেখা যায়, হামলার সময় কামরুল হাসান মুখে কাপড় দিয়ে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করেছিলেন, তবে তার পরিচয় খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়। ভিডিওটি প্রকাশ পাওয়ার পর পুলিশ ও প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়ে।
ফেনী মডেল থানার ওসি মর্ম সিংহ ত্রিপুরা জানান, কামরুল হাসান এই হামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার এজাহারে কামরুলের নাম উল্লেখ করা হয় এবং তার গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান শুরু হয়। যৌথবাহিনীর সহযোগিতায় অবশেষে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।
গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলার তদন্ত চলছে এবং তদন্ত শেষ হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যৌথবাহিনী, বিশেষ করে সেনাবাহিনীর ৪১ মিডিয়াম রেজিমেন্ট, এই অভিযানে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। যৌথবাহিনীর সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কামরুল হাসানের অবস্থান শনাক্ত করে এবং দক্ষতার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে।