প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা: হজযাত্রীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
হজের মৌসুম ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে প্রতারণামূলক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে হজযাত্রীদের এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি আর্থিক লেনদেনে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। সম্প্রতি প্রতারণাকারীরা নিজেদের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে হজযাত্রীদের অর্থ ফেরতের কথা বলে তাদের ব্যক্তিগত আর্থিক তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে, কিছু প্রতারক চক্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে হজ সংক্রান্ত বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে হজযাত্রী, হজ এজেন্সি মালিক ও প্রতিনিধিদের ফোন করছে। এ সময় প্রতারকরা ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ ও নগদের তথ্য চেয়ে প্রতারণার চেষ্টা করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের টাকা ফেরত দেওয়ার সময় বিইএফটিএন (BEFTN) বা সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে রিফান্ড করে থাকে। তাই কোনোভাবেই ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, বিকাশ বা নগদের ব্যক্তিগত তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে চাওয়া হয় না।
এমন পরিস্থিতিতে হজযাত্রীদের আর্থিক নিরাপত্তা রক্ষার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, কোনো ধরনের ফোনকল বা বার্তা পেলে তা যাচাই না করে ব্যক্তিগত আর্থিক তথ্য শেয়ার করবেন না। হজযাত্রা বা হজ প্রক্রিয়ার যেকোনো বিষয়ে সন্দেহজনক কিছু ঘটলে সরাসরি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রতারণা প্রতিরোধে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৯ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে অনুরোধ করেছে। এই প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
১. ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না: কোনো ফোনকল বা বার্তার মাধ্যমে যদি আপনার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, বিকাশ বা নগদের পিন নম্বর চাওয়া হয়, তাহলে কোনোভাবেই সেগুলো প্রদান করবেন না।
২. সন্দেহজনক লেনদেন এড়িয়ে চলুন: যদি আপনাকে ফোন করে হজ সংক্রান্ত অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়, তবে নিশ্চিত হয়ে নিন যে সেটি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আসছে কিনা। মন্ত্রণালয় সবসময় ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ ফেরত দেয়।
৩. সরকারি যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করুন: প্রতারণার আশঙ্কা থাকলে মন্ত্রণালয়ের নির্দিষ্ট হটলাইন নম্বর বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হন।
৪. বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব বা ভুল তথ্য এড়িয়ে চলুন: প্রতারণাকারীরা অনেক সময় সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে প্রতারণা করতে পারে। সুতরাং, কোনো তথ্য যাচাই না করে বিশ্বাস করবেন না।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে যে, প্রতারণাকারীদের থেকে বাঁচতে সবার আগে সচেতন থাকা প্রয়োজন। যারা এই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন তাদের দ্রুত নিকটস্থ থানায় বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে অভিযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয় বারবার সতর্ক করে দিয়েছে, কোনো হজযাত্রী বা এজেন্সি তাদের আর্থিক তথ্য প্রতারণার মাধ্যমে দেওয়ার ভুল করবেন না।
হজযাত্রীদের প্রতি মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, প্রতারণা চক্র যাতে তাদের আর্থিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে না পারে, সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। কোনো ধরনের সন্দেহজনক ফোনকল বা বার্তা পেলে সরাসরি মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সতর্ক বার্তায় আরও জানানো হয়, হজযাত্রী এবং হজ এজেন্সির প্রতিনিধিদের উচিত সবসময় তাদের আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে সতর্ক থাকা এবং প্রতারণামূলক কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য দিলে সেটি নিয়ে তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সর্বশেষ উপদেশ: হজযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র যাত্রা। এই যাত্রা সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য হজযাত্রীদের আর্থিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।