বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের তারল্য সংকট নিরসনে দুর্বল ছয়টি ব্যাংককে মোট ১,৬৪০ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিয়েছে সবল তিনটি ব্যাংক। রোববার (২০ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, আর্থিক চাপে থাকা ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট মোকাবিলায় সবল ব্যাংকগুলো সহায়তা প্রদান করছে, যা দুর্বল ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট কিছুটা কমাতে সাহায্য করছে। সোনালী ব্যাংক পিএলসি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি মিলে এই ঋণ সহায়তা প্রদান করেছে।
ঋণ সহায়তার মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক পেয়েছে ৩৭৫ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক ৩০০ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংক ১৫০ কোটি টাকা এবং গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক পেয়েছে ৯৫ কোটি টাকা। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসি পেয়েছে ৩২০ কোটি টাকা এবং এক্সিম ব্যাংক পিএলসি পেয়েছে ৪০০ কোটি টাকার সহায়তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, “গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের ধৈর্য ধরতে হবে। মানুষ যদি অহেতুক ব্যাংকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে, তাহলে কোনো ব্যাংকই সেই চাপ সামাল দিতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে তারল্য সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
এর আগে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রদানে গ্যারান্টি প্রদান করে এবং সবল ব্যাংকগুলোর সাথে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, ঋণের টাকা ফেরত চাইলে তিন দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক তা ফেরত দেবে। ঋণের সুদহার নির্ধারণ করা হবে চলমান বাজারের রেটে।
এ উদ্যোগে অংশগ্রহণকারী সবল ব্যাংকগুলো হলো সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, শাহ্জালাল ইসলামি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, পুবালি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল করতে এবং গ্রাহকদের আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই পদক্ষেপ তারল্য সংকট নিরসনে কতটুকু কার্যকরী হয়, সেটি সময়ই বলে দেবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে।