ওয়াশিংটন, ৮ আগস্ট ২০২৪ – বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলির প্রেক্ষাপটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেনকে চিঠি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ছয়জন কংগ্রেস সদস্য। চিঠিতে তারা শেখ হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতা ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান।
গত ৭ আগস্ট লেখা এই চিঠিতে কংগ্রেসের উভয় কক্ষ—সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা দাবি করেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে ঘটনা ঘটেছে, তা তাদের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১৫ জুলাই সরকারি চাকরিতে অন্যায্য কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করে আওয়ামী লীগ সরকার। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বেআইনি বলপ্রয়োগের অভিযোগ তুলে তারা বলেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও তাজা গুলি ছোড়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলেও, আওয়ামী লীগের নেতারা এখনও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহির মুখে পড়েননি। এ প্রেক্ষাপটে ‘গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস অ্যাকাউন্টিবিলিটি অ্যাক্ট’সহ প্রযোজ্য আইনের আওতায় ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আহ্বান জানান কংগ্রেস সদস্যরা।
চিঠিতে কংগ্রেস সদস্যরা উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনা দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেন, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করে জাতিসংঘ। কংগ্রেস সদস্যদের মতে, আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হলে, আওয়ামী লীগ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমনপীড়ন চালায়, যার ফলস্বরূপ প্রায় ১০০ জন নিহত হন।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী কংগ্রেস সদস্যরা হলেন লয়েড ডগেট, এডওয়ার্ড জে মার্কি, উইলিয়াম আর কিটিং, ক্রিস ভন হলেন, জেমস পি ম্যাকগভার্ন ও অল গ্রিন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কাছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কঠোর জবাব দেওয়ার দাবি জানান।