জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত কলেজছাত্র নজিবুল সরকার বিশাল এবং অটোচালক মেহেদি হাসানের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর), আদালতের নির্দেশে মামলার আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে স্থানীয় প্রশাসন তাদের মরদেহ কবর থেকে তোলে।
নিহত কলেজছাত্র বিশালের মরদেহ আজ দুপুরে পাঁচবিবি উপজেলার ধরনজি ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়। অন্যদিকে, মেহেদির মরদেহ বিকেলে পৌর এলাকার শেখপাড়া মহল্লার পারিবারিক কবরস্থান থেকে তোলা হয়। মরদেহ উত্তোলনের পরপরই তাদের জয়পুরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য।
গত ৪ আগস্ট জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জিরো পয়েন্ট এলাকায় পুলিশের গুলিতে কলেজছাত্র নজিবুল সরকার বিশাল নিহত হন। এর ঠিক পরের দিন, ৫ আগস্ট, সদর থানা ঘেরাও কর্মসূচির সময় অটোচালক মেহেদি গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। তখন ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের মরদেহ নিজ নিজ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ছেলে হত্যার অভিযোগে ১৮ আগস্ট শহীদ বিশালের বাবা মজিদুল সরকার এবং মেহেদির স্ত্রী জেসমিন আকতার সৃষ্টি পৃথকভাবে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ২২৭ জনকে আসামি করা হয়। মামলার প্রক্রিয়ায় আদালতের নির্দেশে নিহতদের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।
মরদেহ উত্তোলনের সময় জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল বাইন ও আব্দুর রউফ, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. শাহ আলম শোভন, গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলমসহ নিহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়ে আরও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনাটি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠেছে।