ঢাকা: সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নির্দেশনা দিলেও খুচরা বাজারে এখনো তা কার্যকর হয়নি। বর্তমান বাজারে ডিম প্রতি ডজনের জন্য ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ২০ টাকা। সরবরাহ সংকট এবং পাইকারি বাজারের উচ্চ মূল্যের কারণে অধিকাংশ খুচরা বিক্রেতা সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে পারছেন না।সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মঙ্গলবার ডিমের খুচরা মূল্য প্রতি ডজন ১৪২ টাকা নির্ধারণ করে। বুধবার থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি পর্যায়ে ১৪৭ টাকায় ডিম কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে বাজারে দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।একজন ডিম বিক্রেতা জানান, “প্রান্তিক খামারিরা সরকার নির্ধারিত এই রেটে ডিম সরবরাহ করছে না। পাইকারি পর্যায়ে ১২৭০-১২৮০ টাকা প্রতি ১০০ ডিমের দাম পড়ে। এর সাথে পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ যোগ করলে আরও ৩০ টাকা বাড়ে। এতে করে নির্ধারিত দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়।”পাইকারি দামের ওপর চাপ খুচরা পর্যায়ে সরাসরি প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে খুচরা বাজারে ডিম প্রতি ডজন ১৬৫ টাকার কাছাকাছি দামে বিক্রি হচ্ছে। নির্ধারিত দামে ডিম সরবরাহ করতে না পারায় অনেক দোকানি ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।অতিরিক্ত দামে ডিম বিক্রি এবং ট্রেড লাইসেন্স ও ক্রয় রশিদ না থাকার অপরাধে রাজধানীর মিরপুরে এক ডিম বিক্রেতাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল জানান, “উনি স্বীকার করেছেন যে ডিম ১১ টাকা করে কিনেছেন, কিন্তু ১৫ টাকা করে বিক্রি করছেন। এটি স্পষ্টতই অযৌক্তিক এবং সরকারের নির্ধারিত মূল্যের লঙ্ঘন।”অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযান শেষে ঐ দোকানের সব ডিম সরকারি দামে বিক্রি করে দেন, যা কিনতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভিড় লেগে যায়।ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ডিম ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের নির্দেশনা মেনে ডিম বিক্রি করার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে যে, নির্ধারিত দামের বাইরে ডিম বিক্রির চেষ্টা করা হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ডিমের বাজারে অস্থিরতা কমাতে এবং ক্রেতাদের স্বস্তি দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
