বর্তমানে সবজি, তেল, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এমন পরিস্থিতিতে এবার চালের দামও বেড়েছে, যা ক্রেতাদের জন্য নতুন করে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। চালের দাম বৃদ্ধির পেছনে বন্যার প্রভাবকে অজুহাত হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। ফলে বাজারের ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখা ক্রেতাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
সাম্প্রতিক ১৫ দিনের ব্যবধানে চালের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিশেষ করে মোটা চালের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। স্বর্ণা, গুটি স্বর্ণা ও ব্রি-২৮ চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া মাঝারি মানের মিনিকেট চালের দামও ঊর্ধ্বমুখী। তুলনামূলকভাবে নাজিরশাইল চালের দাম কিছুটা কম হলেও সেটিও ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, ব্রি-২৮ চাল আগে ৫৬ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। মিনিকেট চালের দাম ৬৮ টাকা থেকে বেড়ে ৭২ টাকায় পৌঁছেছে। যদিও চালের সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে, বাজারে তদারকির অভাবের কারণে দাম কমার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তাদের মতে, মিল মালিক ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর মজুদের কারণে বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
দাম বাড়লেও ক্রেতাদের আয় বাড়েনি, বরং ব্যয়ের চাপ বেড়েছে। প্রতিদিনের জীবনযাত্রার খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে বলে জানান তারা।
চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার চাল আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় এনবিআরকে শুল্ক কমিয়ে আনতে চিঠি দিয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বছরে মোটা চালের দাম ৭ শতাংশ, মাঝারি মানের চাল ৯.৫ শতাংশ এবং সরু চালের দাম ৯ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে বন্যার কারণে প্রায় ১১ লাখ টন চালের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতির ফলে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে এবং দাম বাড়ানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে বাজার পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
—