ঢাকা, ১৪ অক্টোবর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও গোপালগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফারুক খানকে আটক করেছে র্যাব। র্যাবের একটি বিশেষ দল তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পরে তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফারুক খান আওয়ামী লীগের একজন বিশিষ্ট নেতা এবং দীর্ঘদিন ধরে দলটির সঙ্গে যুক্ত আছেন। তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে গোপালগঞ্জ-১ আসনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং দলের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত একটি ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই আন্দোলনে বেশ কয়েকজন হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনটি মূলত দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলমান সামাজিক বৈষম্য, শিক্ষাব্যবস্থার অসামঞ্জস্য এবং অর্থনৈতিক অসমতা ইত্যাদির বিরুদ্ধে ছাত্রদের এক ধরনের প্রতিবাদ। এই আন্দোলন থেকে কয়েকটি বড় ঘটনা সামনে আসে, যেখানে কিছু ছাত্র-জনতা হতাহত হন। এ ধরনের ঘটনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই দায়ী হিসেবে চিহ্নিত হন।
ফারুক খানকে এই মামলাগুলোর একজন প্রধান আসামি হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। র্যাবের তথ্যমতে, এই মামলাগুলোতে তার ভূমিকা এবং সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, যাতে মামলাগুলোর যথাযথ তদন্ত এবং বিচারিক প্রক্রিয়া চালানো যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনটি দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বৈষম্য ও অবিচারের বিরুদ্ধে একটি সোচ্চার প্রতিবাদ। এই আন্দোলনটি শুরু থেকেই সামাজিক এবং রাজনৈতিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আন্দোলনের সময়কালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং তাদের সমর্থকদের ওপর ব্যাপক অভিযোগ ওঠে যে তারা এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছিল।
ফারুক খানকে অভিযুক্ত করার ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। তার দলীয় ভূমিকা এবং সাংসদ হিসেবে তার অতীতের কার্যক্রমকে সামনে রেখে এই মামলাগুলোতে তার সম্পৃক্ততা অনেকের কাছে বিস্ময়কর হিসেবে মনে হতে পারে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তারা সব প্রমাণ ও তথ্য বিশ্লেষণ করেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
ফারুক খানকে রিমান্ডে নেওয়া হতে পারে, যাতে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আরও খতিয়ে দেখা যায়। ডিবি এবং র্যাব যৌথভাবে এই মামলাগুলোর তদন্ত করছে, এবং আদালতে প্রমাণ উপস্থাপনের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই গ্রেপ্তারের ঘটনায় দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।