বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে দেশের কৃষি খাতে যান্ত্রিকীকরণের ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা। প্রথম দু’টি প্রকল্পে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করার পর বর্তমানে চলমান প্রকল্পটির বাজেট ছাড়িয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। এটি দেশের কৃষি খাতে সবচেয়ে বড় একক প্রকল্প হিসেবে পরিচিত, যেখানে কৃষকদের যন্ত্রপাতি কেনায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
কৃষকদের জন্য ভর্তুকির সুযোগ
সরকারের এই প্রকল্পের আওতায়, ধান কাটার জন্য ব্যবহৃত কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের দাম ৩০ লাখ টাকা হলে, সরকার ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। অর্থাৎ কৃষকরা এই যন্ত্রটি ১৫ লাখ টাকায় কিনতে পারছেন। হাওর এবং উপকূলীয় এলাকায় ভর্তুকির পরিমাণ আরও বেশি, যা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে ৩০ লাখ টাকার যন্ত্র কৃষককে মাত্র ৯ লাখ টাকায় দেয়া হচ্ছে। গত সাড়ে তিন বছরে প্রায় ৪০ হাজার যন্ত্র ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
যান্ত্রিকীকরণের প্রভাব
প্রকল্পটি বিদ্যুতের গতিতে পরিচালিত হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই বিপুল সংখ্যক কৃষক যন্ত্রপাতির সুবিধা পেয়েছেন। সরকারি তালিকায় ভর্তুকির মাধ্যমে সরবরাহ করা যন্ত্রের বিস্তারিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন কৃষকের নাম-ঠিকানা, যন্ত্রের মডেল, ইঞ্জিন ও চ্যাসিস নম্বরসহ সরবরাহকারী কোম্পানির নাম ও ঠিকানা।
ভর্তুকির আওতায় যেসব যন্ত্র
মোট ১২ ধরনের কৃষিযন্ত্র ভর্তুকির আওতায় দেয়া হচ্ছে, যার মধ্যে ফসল বোনা থেকে শুরু করে কাটা পর্যন্ত সকল প্রয়োজনীয় যন্ত্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও দামি যন্ত্র হলো কম্বাইন হারভেস্টার, যার দাম কোম্পানি ভেদে ৩০ থেকে ৪৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই যন্ত্রের চাহিদা কৃষকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের ভবিষ্যৎ
কৃষি খাতে যান্ত্রিকীকরণের এ উদ্যোগ দেশের কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং তাদের শ্রম খরচ কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। তবে প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং যন্ত্রের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।