বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে, ব্যাংক খাতের চলমান সংকট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন আব্দুল হাই। তিনি বলেন, দেশে এস আলমের মতো ব্যাংক লুটেরাদের উত্থানে সরকারের সহযোগিতা রয়েছে। যারা ব্যাংকের বিপুল অর্থ লুট করে বিদেশে পালিয়ে গেছেন, তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
ব্যাংক খাতের চলমান অস্থিরতা ও তারল্য সংকট সম্পর্কে আব্দুল হাই বলেন, “ব্যাংক খাত সংস্কারের কাজ চলছে, তবে আস্থা পুনরুদ্ধারে কিছুটা সময় লাগবে।” তিনি আরও যোগ করেন, এই সমস্যা সমাধানে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
এর আগে, বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ব্যাংক খাতে তৈরি হওয়া তারল্য সংকট, যা আগস্ট থেকে শুরু হয়ে অক্টোবরে এসে তীব্র আকার ধারণ করেছে, এই বৈঠকের মূল বিষয়বস্তু ছিল।
ব্যাংকিং সেবা নিয়ে ভোগান্তি
দুর্বল ব্যাংকগুলোর গ্রাহকরা বর্তমানে তাদের প্রয়োজনীয় অর্থ তুলতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কিছু কিছু ব্যাংকে মাত্র ১০ হাজার টাকা তুলতেও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে গ্রাহকদের রোষানল থেকে বাঁচতে গেট বন্ধ করে সীমিত আকারে লেনদেন চালাতে হচ্ছে।
একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন যে, ব্যাংকে গেলেও প্রয়োজনীয় অর্থ উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনে সংকট তৈরি করছে। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী আনোয়ারুল আজম স্বীকার করেন, “আমরা গ্রাহকদের অর্থ দিতে বেশ কষ্টের মধ্যে আছি, তবুও যতটা সম্ভব অর্থ সরবরাহের চেষ্টা করছি।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগ
তারল্য সংকট মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্য সবল ব্যাংক থেকে অর্থ ধার নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। তবে ব্যাংকারদের শঙ্কা, দ্রুত তারল্য সহায়তা দেয়া না হলে গ্রাহকদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না। ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সক্রিয় পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।