কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় ‘টাওয়ার হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ সিজারিয়ান অপারেশনের পর রাবেয়া আক্তার (৩৪) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে, যা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, রাবেয়া আক্তার চান্দিনা উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের পাঁচধারা গ্রামের বাসিন্দা এবং আশিকুর রহমান আশুর স্ত্রী। সিজারিয়ান অপারেশনের পর মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. সারোয়ার জাহান এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কর্মীরা অপারেশন থিয়েটার ছেড়ে পালিয়ে যান।
স্বজনদের অভিযোগ, প্রসব ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ডাক্তার দ্রুত সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে অপারেশনের পরপরই রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটে এবং স্বজনদের অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করতে বলা হয়। রাবেয়ার স্বামী আশিকুর রহমান বলেন, “আমার স্ত্রীর কী হয়েছে জানতে চাইলে তারা আমাদের ওটি রুমে ঢুকতে দেয়নি। পরে আমরা জোর করে ঢুকে দেখি আমার স্ত্রীর মুখ ঢেকে রেখেছে এবং ডাক্তারসহ কেউ সেখানে নেই।”
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর স্থানীয় জনতা হাসপাতালে ভিড় জমায় এবং বিক্ষোভ শুরু করে।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. সোহাগ জানান, “প্রসূতি মারা গেলেও নবজাতক সুস্থ আছে এবং তাকে পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এটি একটি দুর্ঘটনা, কোনো অবহেলা নয়।”
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. আসমা বেগমকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার আরও জানান, “হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, তাই এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।