কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আড্ডা এলাকায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে (২২) সংঘবদ্ধভাবে ধ*র্ষণ করার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটে ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে। অভিযুক্তরা ওই নারীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে এবং বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা দায়ের করলে একজন অভিযুক্তকে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করা হয়।
মামলার তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী স্বামীর স্ত্রী কিছুদিন আগে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। ঘটনার দিন তিনি তার ভাইয়ের মেয়ে এবং বোনের মেয়েকে নিয়ে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। আড্ডা বাজারের উত্তর পাশে অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করার সময় তিনজন বখাটে তার পরিচয় জানতে চায়। তারা দুই শিশুকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে দূরে সরিয়ে দেয় এবং তারপর ওই নারীর মুখ চেপে পাশের একটি নলকুপের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে তিন বখাটে পালাক্রমে তাকে ধ*র্ষণ করে এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে।
মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তরা হলেন, আড্ডা এলাকার শফিক মিয়ার ছেলে মো. মানিক (৩৩), দুলাল মিয়ার ছেলে মো. রুবেল (২৮), এবং বাচ্চু মিয়ার ছেলে মো. বাপ্পি (২৫)। স্থানীয়রা রুবেলকে আটক করে গণধোলাই দেয় এবং পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বাকি দুইজন অভিযুক্ত এখনও পলাতক রয়েছে, তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণ ভীষণ ক্ষুব্ধ। বরুড়া থানার ওসি কাজী নাজমুল হক জানান, ইতোমধ্যেই রুবেলকে আটক করা হয়েছে এবং বাকি আসামিদের ধরার জন্য পুলিশ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছেন, এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে।
এই ধরণের নৃশংস ঘটনা সমাজে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে এবং ন্যায়বিচারের দাবি উঠেছে। এই ঘটনায় নারী ও শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ঘটনার দ্রুত বিচার এবং কঠোর শাস্তি প্রদান অপরিহার্য।
সাম্প্রতিক এই ঘটনার পর নারীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যেন দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়।
এ ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজে গুরুতর সংকেত দেয়। সকলের উচিত নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সমাজের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই ধরণের অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব।