নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারের নিউ আলপনা ক্লিনিকে ভুল রক্ত প্রয়োগের অভিযোগে গর্ভে থাকা আট মাস ২১ দিনের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ভুক্তভোগী সাথী বেগম, উপজেলার সাবগাড়ী গ্রামের মো. সালামের মেয়ে ও খাইরুল ইসলামের স্ত্রী। এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ক্লিনিকটি সিলগালা করে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন গুরুদাসপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম এবং গুরুদাসপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. মাসুদ রানা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রক্তশূন্যতায় ভোগা সাথী বেগমকে তার স্বামী খায়রুল ইসলাম গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজারের নিউ আলপনা ক্লিনিকে ভর্তি করান। সেখানকার কর্তৃপক্ষ সাথীর রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজেটিভ বলে নির্ণয় করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ওই গ্রুপের রক্ত প্রয়োগ করা হয়। রক্ত প্রবেশের পরপরই সাথীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং শরীরে লাল দাগ দেখা দেয়। গর্ভের শিশুটির নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি খারাপ হলে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে গুরুদাসপুরের হাজেরা ক্লিনিকে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে সাথীর রক্তের গ্রুপ পুনরায় পরীক্ষা করে ‘ও’ পজেটিভ পাওয়া যায়। ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল ইসলাম জানান, ভুল রক্ত প্রয়োগের কারণে সাথীর শরীরে নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, যার ফলে রাতে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে মৃত শিশুটি বের করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহীতে স্থানান্তর করা হয়।
ভুক্তভোগীর স্বামী খায়রুল ইসলাম জানান, মৃত সন্তানকে নিয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করেছেন। বর্তমানে শিশুটিকে মর্গে রেখে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আছেন। তিনি নিউ আলপনা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সরোয়ার হোসেন জানান, শিশুটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে এবং রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।