মুম্বাই, ২৪ সেপ্টেম্বর: ইসলাম ধর্মের প্রতি বিরূপ মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দাবিতে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন (AIMIM) দলের সাবেক সংসদ সদস্য ইমতিয়াজ জলিলের নেতৃত্বে হাজার হাজার মুসল্লি মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে একটি বিশাল পদযাত্রা শুরু করে। এই ‘তিরিঙ্গা সংবিধান র্যালি’ গতকাল ২৩ সেপ্টেম্বর ছত্রপতি সম্ভাজিনগর থেকে যাত্রা শুরু করে, যেখানে মুসলিম, দলিত, এবং মারাঠা সম্প্রদায়ের লোকজন একত্রিত হয়ে অংশ নেয়।
মূলত, বিজেপি বিধায়ক নিতেশ রানে এবং ধর্মগুরু রামগিরি মহারাজের ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করার অভিযোগের ভিত্তিতে এই পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। হাজার হাজার মুসল্লি ও সমর্থকরা প্রায় ২ হাজার গাড়িতে করে সমৃদ্ধি সুপার এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে, যার ফলে মহাসড়কে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এটি প্রথমবারের মতো সমৃদ্ধি এক্সপ্রেসওয়েতে এত বড় আকারে যানজটের ঘটনা ঘটে।
ইমতিয়াজ জলিল এই পদযাত্রার মাধ্যমে দাবি করেন যে, নিতেশ রানে এবং রামগিরি মহারাজকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতার পরিপন্থী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হোক। পদযাত্রার উদ্দেশ্য ছিল শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মাধ্যমে সমাজে বিভাজনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং সংবিধানের প্রতি আস্থা প্রদর্শন করা।
তবে, মুম্বাইয়ের প্রবেশপথে প্রায় ৩ হাজার পুলিশ মোতায়েন করে বিক্ষোভকারীদের মুম্বাইয়ের দিকে অগ্রসর হওয়া থেকে বিরত রাখা হয়। মুলুন্ড টোল প্লাজায় পৌঁছানোর পর, তারা জেলা কালেক্টরসহ সরকারি প্রতিনিধিদের কাছে ইসলাম ধর্মের প্রতি কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন জানায়। পরে কোনো সহিংসতার ঘটনা ছাড়াই বিক্ষোভকারীরা ফিরে যায়।
এই পদযাত্রায় শুধু মুসল্লিরাই নয়, বরং দলিত ও মারাঠা সম্প্রদায়ের লোকজনও অংশ নেয়, যা এই আন্দোলনকে একটি বিস্তৃত সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের রূপ দিয়েছে। ইমতিয়াজ জলিল র্যালিতে বলেন, “আমাদের দাবি একটাই—ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বন্ধ করতে হবে এবং সংবিধানের নীতিমালাকে সমুন্নত রাখতে হবে।”
পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার সত্যনারায়ন চৌধুরী জানান, পরিস্থিতি পুরো সময় নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার পর তারা শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে যায়।