বেনাপোল কাস্টম হাউসের ভল্ট ভেঙে স্বর্ণ ও বিদেশি মুদ্রা চুরির ঘটনায় শুল্ক বিভাগের সাবেক সহকারী কমিশনার কল্যাণ মিত্র চাকমা বড় ধরনের বিপাকে পড়েছেন। এ ঘটনায় গঠিত পৃথক তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তার পেশাগত অসদাচরণ ও দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই নন-ক্যাডার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে। যদিও কল্যাণ মিত্র চাকমা নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
স্বর্ণ চুরি ও তদন্তের ইতিহাস
২০১৯ সালের ৮ থেকে ১০ নভেম্বরের সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বেনাপোল কাস্টম হাউসের ভল্ট ভেঙে স্বর্ণ ও বিদেশি মুদ্রা চুরি হয়। ঘটনার পর এনবিআর পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে, যার নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন এনবিআর সদস্য খন্দকার আমিনুর রহমান। ওই কমিটির তদন্তে উঠে আসে, গুদামের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এই চুরির সুযোগ তৈরি হয়।
পরে আরও গভীর তদন্তের নির্দেশ দেয় এনবিআর। সাবেক এনবিআর সদস্য আব্দুল মান্নান শিকদারের নেতৃত্বাধীন একটি তদন্ত কমিটিও অসদাচরণের প্রমাণ পায়, যা কল্যাণ মিত্র চাকমার দায়িত্বহীনতার দিকটি স্পষ্ট করে। এসব তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কল্যাণ মিত্র চাকমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। তবে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তদন্ত চললেও এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তদন্ত কমিটির অভিযোগ ও কল্যাণ মিত্র চাকমার ভূমিকা
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কল্যাণ মিত্র চাকমা বেনাপোল কাস্টম হাউসের আটক ও ব্যাগেজ শাখায় দায়িত্ব পালনকালে গুদামের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন। তিনি গুদামের স্বর্ণ ও মূল্যবান সামগ্রী বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেননি এবং গুদাম পরিদর্শন বা কর্মকর্তাদের কার্যকর মনিটরিংয়ের কোনো পদক্ষেপ নেননি। তার এসব পদক্ষেপ দায়িত্বে অবহেলা ও অসদাচরণের পরিচয় বহন করে, যার কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।