সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে গত ১৫ বছরে সম্পদের ব্যাপক বৃদ্ধির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তার সম্পদ ২ হাজার ৮০০ গুণ বেড়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তার সম্পদের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। অভিযোগ করা হয়, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জাকির হোসেন তার পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনদের সম্পদ বৃদ্ধির পথে পরিচালিত করেছেন।
অঢেল সম্পদের মালিকানা
জাকির হোসেনের সম্পদের পরিমাণ ২০০৮ সালের নির্বাচনে মাত্র ১৩ লাখ টাকা দেখানো হলেও, ২০১৮ সালের হলফনামায় তা দাঁড়ায় ৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। তবে, সূত্র অনুযায়ী বাস্তবে তার সম্পদের পরিমাণ হাজার কোটি টাকার বেশি। তার সম্পদের মধ্যে রয়েছে ঢাকা, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও জামালপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বাড়ি, জমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। জামালপুরের বকশিগঞ্জে ৬০ বিঘা জমি দখল করে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ‘মায়ের মাজার’ নামে একটি ব্যক্তিগত মাজার। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় জমি দখল, টেন্ডারবাজি এবং নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
পরিবারতন্ত্র এবং দখলদারিত্ব
জাকির হোসেনের পরিবারের সদস্যদের সম্পদের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তার স্ত্রী, ছেলে, ভাইবোনসহ পরিবারের প্রায় ১১ জন সদস্যের নামে বহুতল বাড়ি রয়েছে। তাদের নির্মিত ভবনগুলোর কারণে রৌমারীর মন্ডলপাড়া এলাকাটি ‘মন্ত্রীপাড়া’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এছাড়া জাকির হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা পদে কর্মরত থাকলেও, গত ১৪ বছর কর্মস্থলে না গিয়েও নিয়মিত বেতন ও ভাতা উত্তোলন করে আসছেন।
অবৈধ দখল ও ব্যবসা
জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সরকারি জমি অবৈধভাবে দখলের অভিযোগ রয়েছে। রৌমারী, রাজিবপুর, দাঁতভাঙ্গা ও অন্যান্য এলাকায় সরকারি জমি দখল করে তিনি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এসব জমির বাজারমূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা। তুরা রোডের একটি স্থানে সরকারি জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে পাথরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে সুপার মার্কেট ও বাড়ি।
‘পাগলা বাহিনী’ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম
জাকির হোসেনের রাজনৈতিক কার্যক্রমে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ন্ত্রণের অভিযোগও রয়েছে। তার নেতৃত্বাধীন ‘পাগলা বাহিনী’ নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী স্থানীয়দের কাছে আতঙ্কের নাম ছিল। বাহিনীর সদস্যরা সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে জমি দখল, মাদক ব্যবসা এবং চাঁদাবাজির মতো কাজ করত